আন্তর্জাতিক ডেস্ক ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের আরো সামরিক সহায়তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত রাশিয়া ও পশ্চিমের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে মস্কো। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ বলেছেন, এটি মস্কোর জন্য ‘উপস্থিত হুমকি’।যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের জন্য নতুন করে ৬২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের সামরিক সহায়তার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই রুশ রাষ্ট্রদূতের এ মন্তব্যগুলো এলো। এর পেছনে কাজ করেছে আরো সামরিক সহায়তা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির আলোচনার বিষয়টিও।গতকাল বুধবার দেওয়া বক্তব্যে রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ যুক্তরাষ্ট্রকে স্পষ্টভাবেই ‘সংঘাতে অংশগ্রহণকারী’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন।
এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস আবারও জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কখনোই রাশিয়ার ইউক্রেনের ভূখণ্ড সংযুক্ত করাকে স্বীকৃতি দেবে না। আরো বলা হয়, ‘যত দিন প্রয়োজন হয় প্রেসিডেন্ট বাইডেন তত দিনই রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবেন। ’নতুন মার্কিন সামরিক সহায়তার মধ্যে অত্যাধুনিক রকেট ব্যবস্থা হিমারস, অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং সাঁজোয়া যান রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।প্রসঙ্গত ইউক্রেনের হাতে আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ১৬টি হিমারস সিস্টেম রয়েছে। নতুন সহায়তা প্যাকেজের মধ্য দিয়ে ইউক্রেনের পেছনে যুদ্ধ শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এ পর্যন্ত মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে এক হাজার ৭৫০ কোটি ডলার।সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণে উল্লেখযোগ্য জয় পেয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। রুশ বাহিনীর বিপক্ষে এই পাল্টা অগ্রাভিযানে মার্কিন অস্ত্র ইউক্রেনের সেনাদের সহায়তা করছে এমন একটি ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে।
রুশ এই রাষ্ট্রদূত আরো বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়ার বিষয়টি ‘রক্তপাত এবং নতুন হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি করবে। …আমরা ওয়াশিংটনকে এই উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি যার পরিণতি হতে পারে অত্যন্ত গুরুতর। ’রাশিয়ার সেনাবাহিনী ইউক্রেনে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হতাহতের শিকার হয়েছে। লোকবল হারানোর পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ বৃদ্ধির মুখে ইউক্রেনে সেনা বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। যেকোনো মূল্যে প্রতিরোধ গড়ে তোলারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি। গত সপ্তাহেই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজেদের ভূখণ্ডের সঙ্গে পূর্ব ইউক্রেনের দোনেত্স্ক ও লুহানস্ক এবং দক্ষিণের খেরসন ও জাপোরিঝিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে জুড়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে অঞ্চলগুলোর কোনোটিতে এখনো পূর্ণ দখল নেই রাশিয়ার। বরং সম্প্রতি পাল্টা আক্রমণে খেরসনে অনেকটাই এগিয়েছে ইউক্রেনের বাহিনী।
সাবেক সিআইএ পরিচালকের হুঁশিয়ারি
গত রবিবার সাবেক সিআইএ পরিচালক ডেভিড পেত্রাউস বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্রের হামলা করলে যুক্তরাষ্ট্র ও তাঁর মিত্ররা ইউক্রেনে অবস্থানরত রাশিয়ার বাহিনী ও সরঞ্জাম ধ্বংস করে দেবে। তাদের কৃষ্ণ সাগরের রণতরী বহরও ডুবিয়ে দেওয়া হবে।পেত্রাউস বলেন, রাশিয়ার আঘাতের জবাবে ন্যাটো জোট ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে এবং ক্রিমিয়াতেও রাশিয়ার প্রচলিত বাহিনীকে শনাক্ত করবে ও কৃষ্ণ সাগরে তাদের প্রতিটি জাহাজ ডুবিয়ে দেবে।