আন্তর্জাতিক ডেস্ক বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা আরো তিনটি দেশকে সেঙগেন চুক্তির আওতায় আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ক্রোয়েশিয়ার যোগদান প্রায় নিশ্চিত হলেও বুলগেরিয়া ও রোমানিয়ার বিষয়ে সংশয় রয়েছে।চলতি সপ্তাহে ইউরোপের প্রাতিষ্ঠানিক সীমানার প্রশ্নে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। বলকান অঞ্চলের পশ্চিমের দেশগুলোর ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রশ্নে সামান্য হলেও কিছু সাফল্য দেখা গেছে।সেই প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে সদিচ্ছা প্রকাশ করেছেন শীর্ষ নেতারা।এবার ইউরোপের মধ্যে মুক্ত সীমানার কাঠামো সেঙগেন চুক্তির আওতায় আরো কিছু দেশকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ইইউ দেশগুলোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা। তাদের অনুমোদন পেলে বুলগেরিয়া, রোমানিয়া ও ক্রোয়েশিয়াও সেঙগেন কাঠামোয় যোগ দিতে পারবে। ক্রোয়েশিয়ার যোগদান প্রায় নিশ্চিত হলেও বাকি দুই দেশের বিষয়ে সংশয় কাটছে না। এ যাত্রায় সেটা সম্ভব না হলে ছয় মাস পর সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।আয়ারল্যান্ড ও সাইপ্রাস ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব ‘আদি’ সদস্যই ২৬ সদস্যের সেঙগেন চুক্তির আওতায় পড়ে। এ ছাড়া নরওয়ে, আইসল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও লিচেনস্টাইন ইইউ সদস্য না হয়েও এই কাঠামোয় যোগদান করেছে। সেঙগেন এলাকার বহিঃসীমানায় কড়া নিয়ন্ত্রণ থাকলেও সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সীমানায় সাধারণত কোনো নিয়ন্ত্রণই থাকে না। একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে বহিরাগতদের ভিসাসংক্রান্ত তথ্য জমা হয়, যা সব সদস্য দেশের নাগালে থাকে। চুক্তি স্বাক্ষরকারী সব দেশের সম্মতি ছাড়া নতুন কোনো দেশকে এই কাঠামোর অন্তর্গত করা সম্ভব নয়।ইউরোপীয় কমিশন গত মাসেই সেঙগেন এলাকায় বুলগেরিয়া, রোমানিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার যোগদানের পক্ষে কথা বললেও সদস্য দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দুটি দেশের ক্ষমতা নিয়ে সংশয় থেকে গেছে। অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার মঙ্গলবার ক্রোয়েশিয়ার যোগদানের প্রতি সমর্থন জানালেও বুলগেরিয়া ও রোমানিয়ার অভিবাসন প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ করেন। গত অক্টোবর মাসে নেদারল্যান্ডসের সংসদ এক প্রস্তাব অনুমোদন করে সেই দুই দেশে আইনের শাসন, দুর্নীতি ও সংগঠিত অপরাধচক্রের মাত্রা আরো খতিয়ে দেখার ডাক দিয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রায় এক দশক ধরে এ দুই দেশের যোগদান নিয়ে তর্কবিতর্ক চলছে। ইউরোপীয় কমিশন ২০১১ সালেই বুলগেরিয়া ও রোমানিয়াকে ‘সেঙগেনের জন্য প্রস্তুত’ হিসেবে ছাড়পত্র দিয়েছিল। ২০২২ সালে তিনটি দেশই প্রযুক্তিগত শর্ত পূরণ করেছে বলে কমিশন জানিয়েছে। অর্থাৎ সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, তথ্য সংরক্ষণ ও ভিসা নীতির ক্ষেত্রে সেঙগেনের মানদণ্ড মেনে চলছে এই তিন দেশ।প্রায় এক দশক ধরে অনুপ্রবেশ ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বাড়তি দুশ্চিন্তার কারণে সেঙগেন এলাকার গুরুত্ব আরো বেড়ে গেছে। সদস্য দেশগুলো এমন হুমকির মোকাবেলা করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারলে মুক্ত ও অবাধ এই এলাকা বিপন্ন হতে পারে। তাই নতুন সদস্য গ্রহণ করার আগে সে বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে চায় অস্ট্রিয়া ও নেদারল্যান্ডসের মতো দেশ।অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর নেহামার বলেন, এই মুহূর্তে তার দেশে প্রায় ৭৫ হাজার অনথিভুক্ত বিদেশি অনুপ্রবেশকারী বাস করছে। অর্থাৎ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহিঃসীমানা অতিক্রম করেই তারা অস্ট্রিয়ায় প্রবেশ করেছে। সবার আগে সেই সমস্যার সমাধান করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।