• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ ক্যাবরেরার টেকনিক নিয়ে প্রশ্ন ব্রাজিলের ভয়ংকর তিন কাতারের আমির ঢাকায় আসছেন ২২ এপ্রিল  অ্যানেসথেসিয়াজনিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মন্ত্রণালয়ের ৬ দফা নির্দেশনা নকশায় ‘ত্রুটি নিয়ে’ গণশুনানিতে ক্ষোভ আড়ত ভাঙলে পাঁজর ভাঙবে ব্যবসায়ীদের গ্রামে সর্বজনীন পেনশন নিবন্ধন সহজ হচ্ছে ২৯ রমজান কি অফিস খোলা? বাংলাদেশ ইউনানী মেডিকেটেড কসমেটিক এর সম্ভাব্না শীর্ষক সেমিনার” ২০২৪ ইং। বাইডেনের শীর্ষ অগ্রাধিকারে বাংলাদেশের গণতন্ত্র সীমান্তে হত্যা বন্ধে আগেই অনুরোধ করা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেনেগালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ৫৪ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে জয়ী ফায়ে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারসহ ভারতের বিভিন্ন ইস্যু নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড্যানিয়েল কাহনেম্যান আর নেই

যৌনশক্তি বর্ধক ওষুধ সেবনে ভয়ংকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হচ্ছে সাধারণ জনগণ।

এসএম বদরুল আলম : জাতীয় স্বার্থে সচেতন মহল দাবি করেন রাজধানীসহ সারা দেশে অবস্থিত ইউনানী, আয়ুর্বেদিক, হারবাল ও হোমিও ওষুধ কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এবং ড্রাগ প্রশাসনের কতিপয় দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তার যোগসাজশে নকল, ভেজাল ও নিম্মমানের ওষুধের রমরমা বাণিজ্য চলছে। নকল, ভেজাল ও নিম্মমানের ওষুধের বিষাক্ত ছোবল দেশে মহামারির আকার ধারণ করেছে। বিষাক্ত ওষুধের বিষক্রিয়ার ফলে মানুষ নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। যার ফল সরুপ চিকিৎসা ব্যায় মিটাতে গিয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে মৃত ব্যক্তির পরিবার ও পরিজন।

বিশেষ করে বলবর্ধক, শক্তিকারক, রুচিবর্ধক ও যৌনশক্তি বর্ধক, ট্যাবলেট, ক্যাপসুল ও সিরাপ সেবনে ভয়ংকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হচ্ছে সাধারণ জনগণ। এ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হওয়ার কারণ স্বরুপ জানা যায়, ইউনানী আয়ুর্বেদিক ও হারবাল ওষুধ প্রতিষ্ঠান মালিক পক্ষ অধিক মুনাফা উপার্জনের লক্ষ্যে ভিটামিন ওষুধে ডেক্সামেথাসন, সিপ্রোহেপ্টাডিন, থিয়ভিট ও ষ্টোরয়েড জাতীয় কেমিক্যাল ব্যবহার করছে। অন্যদিকে যৌন উত্তেজক সিরাপে সিলডেনাফিন সাইট্রেট ও ট্রাডালাফিন সাইট্রেড ব্যবহার করছে। যার ফলে মানবদেহের লিভার, কিডনি ও হার্টের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলছে। ফলে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে এধরনের ওষধের ব্যবহার কারীরা।

বিশেষজ্ঞরা জানান ভায়াগ্রা, সিলডেনাফিন সাইট্রেট ও ট্রাডালাফিন সাইট্রেড কেউ বেশিদিন সেবন করলে আসক্ত হয়ে যায়। সে আর এটা ছাড়তে পারবে না। তিনি বলেন, এটা যত্রতত্র বিক্রি বন্ধ করতে হবে। বিদেশে কুকুরের ওষুধ ক্রয় করতে হলেও প্রেসক্রিপশন প্রয়োজন হয়। অথচ আমাদের দেশে এ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ ওষুধ প্রেসক্রিপশন ছাড়া অবাধে বিক্রি হচ্ছে।

জানা গেছে নতুন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান যোগদান করার পর থেকে অদ্যবধি তিনি জাতীয় ও জনস্বার্থে কল্যাণকর মহোতি সব পদক্ষেপ গ্রহন করছেন। এর মধ্যে বহুল আলোচিত ও ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ডা. আলমগীর মতির মডার্ন হার্বালের কারখানায় ভেজাল বিরোধী অভিযান ও পরিচালনা করেন। একই সাথে অনির্বান মেডিসিনাল ইন্ডাষ্ট্রিজ, ন্যাচার ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানীসহ আরও ছোট বড় ৫০-৬০টি কোম্পানী এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারী ও খুচরা ওষুধের বাজার গুলোতে এ অভিযান পরিচালনা করে দেশের নকল-ভেজাল ওষুধ প্রস্তুত ও বাজারজাতকারীদের ভীত কাঁপিয়ে দেন। সম্প্রতি সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা বেশ কিছু ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করতে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে লিখিত নির্দেশ প্রদান করে। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে প্রাপ্ত হয়ে বর্তমান মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান জেলা পর্যায়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত ওষুধ তত্ত্বাবধায়কদের এক অফিস আদেশের মাধ্যমে বাজার থেকে ঐ সকল কোম্পানির নমুনা সংগ্রহ করে ড্রাগ টেষ্টিং ল্যাবে গুণগত মান যাচাইয়ের নির্দেশ দেন। মহাপরিচালকের এই নির্দেশ প্রদানের পর বিভিন্ন জেলায় ও রাজধানীর বিতর্কিত ওষুধ কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিকট দেনদরবার শুরু করেছেন বলে কোম্পানির মালিকদের একটি সূত্রে জানা যায়।

বিতর্কিত এসব কোম্পানির মধ্যে আল-সাফা ইউনানি (গাজিপুর), জেবিএল ড্রাগ ল্যাবরেটরিজ ইউনানি (গাজিপুর), বিসমিল্লাহ ল্যাবরেটরিজ (নারায়নগঞ্জ), সুরমা ফার্মাসিউটিক্যালস (নারায়ণগঞ্জ), শেড ফার্মাসিউটিক্যালস আয়ুর্বেদিক (ঢাকা), ন্যাচার ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানী (ঢাকা), ফাস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস আয়ুবেদিক (ময়মনসিংহ), হাইম্যাক্স ফার্মাসিউটিক্যাল (ইউনানী), মেডিসান ফার্মাসিউটিক্যালস আয়ুবেদিক (যাত্রাবাড়ি), হামজা ল্যাবরেটরীজ (ইউনানী) ঢাকা, জুরাইনের জেনেসিস ফামাসিউটিক্যাল (আয়ু), প্রিভেন্টিভ বাংলাদেশ (বগুড়া), দিদার ফার্মাসিউটিক্যাল(আয়ু) বগুড়া, প্যানাসিয়া ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ (ইউনানি), বিডি ইউনানিক (চুয়াডাঙ্গা), ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস আয়ুর্বেদিক (চুয়াডাঙ্গা), ডিল্যাক্স ল্যাবরেটরিজ (ঢাকা), আধুনিক ফার্মাসিউটিক্যাল (ঢাকা), নিকো আয়ুর্বেদিক (বগুড়া),  গ্রামো ল্যাবরেটরিজ (আয়ু),  এস এ ল্যাবরেটরীজ ইউনানী, আইকে ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউনানী) ও আইকে আয়ুর্বেদীয় ঔষধালয় (ঢাকা), প্যারেন্ট ল্যাবরেটরীজ, প্রজ্ঞা ল্যাবরেটরীজ (ঝিনাইদহ), ইমপোল ল্যাবরেটরীজ (পাবনা), কনফিডেন্স ফার্মাসিউটিক্যালস আয়ুর্বেদিক (বগুড়া), মল্লিক ল্যাবরেটরিজ ইউনানি (টঙ্গী), ইউনিফিল ল্যাবরেটারীজ ইউনানি (পাবনা), কসমিকো ল্যাবরেটরিজ ইউনানি (পাবনা), রিবাথ ল্যাবরেটরিজ ইউনানি (পাবনা), র‌্যাপিটেক ইউনানি ল্যাবরেটরিজ (খিলগাঁও), নেপলস ল্যাবরেটরীজ লিঃ এবং এসবি হারবাল ও এসবি ল্যাবরেটারীজ আয়ুর্বেদিক (রাজশাহী), ইন্ট্রা ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানী(পাবনা), সবুজ ফার্মাসিউটিক্যাল (ইউনানী) বগুড়া, সানড্রাগ ইউনানী, মাইসান ল্যাবরেটরীজ (ইউনানী) সিলেট, ঢাকা অর্গানিক ফার্মা ইউনানী, নাফিউ ফার্মা ইউনানী, রবিন ফার্মাসিটিক্যাল (আয়ু), আধুনিক ফার্মাসিটিক্যাল ইউনানী, সিকো আয়ুর্বেদিক, জিএম ফার্মাসিটিক্যাল ইউনানী, ওষুধী ল্যাবরেটরিজ (আয়ু), সেইফকো ফার্মাসিটিক্যালস (ইউনানী), ম্যানহার্ট ল্যাবরেটরিজ ইউনানী (রংপুর), জেন ফার্মা ইউনানী, জে-এন্ড-টি ল্যাবরেটরিজ ইউনানী, বিএন ল্যাবরেটরিজ ইউনানী, দিহান ফার্মাসিটিক্যালস (আয়ু) যাত্রাবাড়ি ঢাকা, ইউনিটি ফার্মাসিটিক্যালস (ইউনানী) খুলনা, রয়েল ল্যাবরেটরিজ ইউনানী, ইগো ফার্মা ইউনানী, ইউনিক ল্যাব ইউনানী, মিষ্টিক ফার্মা ইউনানী, একটিভ ইউনানী, জীনি ইউনানীক, আরকে ইউনানী, কেইউ ফার্মা, বিজি ল্যাবরেটরিজ ইউনানী (বগুড়া), ইউনিসন হোমিও, প্রজ্ঞা ল্যাবরেটরিজ (আয়ু), ভারটেক্স হোমিও, এস কে ল্যাব আয়ুবেদিক, জিকে ফামা, ডেলকো ফামা, বেস্ট ওয়ান আয়ুবেদিক, জাহান ল্যাবরেটরীজ,

জনতা ল্যাবরেটরী আয়ু, এমএস ইউনানী ল্যাবরেটরীজ, আশোকা ল্যাবরেটরীজ, অরিজিন ফামাসিউটিক্যাল আয়ু, এ্যাডলাক্স ফামাসিউটিক্যাল, বৃক্ষ ইউনানী, বেঙ্গল হোমিও, ইউনাইটেড হোমিও ফার্মা, ইউনিক হোমিও ল্যাবরেটরি প্রাইভেট লিমিটেড, পুনম হোমিও ল্যাবরেটরি, হোমিও রিসার্চ এন্ড ইনস্টিটিউট, মডেল হোমিও কমপ্লেক্স, গ্লোব ল্যাবরেটরী হোমিও, হ্যানিম্যান ফার্মাসিটিক্যালস হোমিও, ইউনিসন হোমিও ল্যাবরেটরীজ, করোতোয়া হোমিও এন্ড ল্যাবরেটরি, পারুল হোমিও, জামান ফার্মাসিটিক্যালস হোমিও, বেঙ্গল হোমিও ল্যাবরেটরি, সারফ ফামা, বায়োনিক্স ফার্মা আয়ুর্বেদিক, রোজ হেভেন ফার্মাসিটিক্যালস আয়ুর্বেদিক, কনফিডেন্স ফার্মাসিটিক্যালস আয়ুর্বেদিক, ন্যাশনাল এইচ আর আয়ুর্বেদিক সেতু ড্রাগ আযুবেদিক, ফেমাস ফামাসিউটিক্যাল ইউনানী, পেট্রন ল্যাবরেটরীজ (ইউ), সালমা ল্যাবরেটরীজ,  রিকোন ল্যাবরেটরীজ, র‌্যাম ফামা ইউনানী, ইউনিক হোমিও, ডিজিল্যাব (আয়ু), প্র্যারেন্ট ইউনানী, ন্যাশানাল হোমিও, বেক্সটার হারবাল, নবীন ল্যাবরেটরিজ (ইউনানী), ইষ্ট ব্যাঙ্গল ল্যাবরেটরীজ (ইউ), ওষুধী ল্যাবরেটরিজ (আয়ু), অ্যাডরুক ফার্মাসিউটিক্যাল (ইউনানী) ও শ্রীপুর দাওয়া খানা উল্লেখ যোগ্য। এসকল কোম্পানির মধ্যে ইন্ট্রা ফার্মা ইউনানী, ইস্ট বেঙ্গল ল্যাবরেটরীজ ও বিসমিল্লাহ ল্যাবরেটরিজ এর উৎপাদক লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করে ওষুধ প্রশাসন তবে সরেজমিনে এই তিনটি কোম্পানির ওষুধ প্রতিনিয়ত সারাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছে। স্থানীয় ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক বলেছে কোম্পানি বন্ধ, কাগজে কলমেও বলেছে বন্ধ কিন্তু, দেশের আনাচে-কানাচে গ্রাম গঞ্জের হাট বাজারে পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে বিসমিল্লাহ জিনসিন এবং ইন্ট্রা ফার্মার জিনসিন প্লাস, রুবিকর্ড ও আরক লাহামিনা মুড়ি-মুড়কির মত বিক্রি হচ্ছে।

এ বিষয় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম দৈনিক সবুজ বিপ্লবকে জানান, কারো হার্টে বা ব্রেনে সামান্যতম সমস্যা থাকলে, ভায়াগ্রা, সিলডেনাফিন সাইট্রেট ও ট্রাডালাফিন সাইট্রেড সেবনে তার মৃত্যু অবধারিত। তাই নির্ধারিত (চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ) চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এবং শরীরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই এ ধরনের ওষুধ সেবন করতে হবে। বাইপাস সার্জারি, ব্লাডপ্রেশার ও ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা যৌন উত্তেজক ওষুধ খেতে পারবেন না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.