সাভার প্রতিনিধি পারিবারিক কলহের জের ধরে সাভার পৌর এলাকায় সামিয়া আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধূর আত্মহননের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আত্নহত্যা প্ররোচনার মামলায় স্বামী সাদমান সাকিব হৃদয়কে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাতে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সামিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।এরপরই নিহতের স্বামী হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শুক্রবার দুপুরে সাভার মডেল থানা থেকে হৃদয়কে আদালতে পাঠানো হয়।গ্রেপ্তারকৃত সাদনাম সাকিব হৃদয় সাভারের ব্যাংক কলোনী এলাকার জাকারিয়া হোসেনের ছেলে। তিনি গ্রামীণফোনের সাবেক কর্মকর্তা। নিহত সামিয়া আক্তার মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর থানার মিজানুর রহমানের মেয়ে।এই ঘটনায় সামিয়ার বাবা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে স্বামী হৃদয়, শ্বশুর জাকারিয়া হোসেন ও শাশুড়ি জায়েদা পারভিনের বিরুদ্ধে আত্নহত্যার প্ররোচনায় মামলা দায়ের করেছেন।নিহতের মামা আশিকুর রহমান বলেন, ‘পাঁচ বছর হলো পারিবারিকভাবে সামিয়াকে বিয়ে করে হৃদয়। বিয়ের সময় সামিয়ার বাবা ও মামারা মিলে ২৫ ভরি স্বর্ণের গহনা, মোটরসাইকেল ও তিনলাখ টাকার ফার্নিচার উপঢৌকন হিসাবে দেন। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরই কৌশলে সামিয়ার গহনা হাতিয়ে নেন শাশুড়ি জায়েদা পারভিন। মাঝে মধ্যেই এই গহনা নিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি হতো সামিয়ার।
তিনি আরও বলেন, ‘এসব নিয়ে কথা বললেই সামিয়াকে নির্যাতন করা হতো। বৃহস্পতিবারও এই গহনা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর বেলা তিনটার দিকে সামিয়া ফোন করে আমাদের জানায় তাকে মারধর করেছে স্বামী ও শশুর-শাশুড়ি। এর কিছু সময় পরেই সামিয়ার স্বামী আমাদের ফোনে জানায় সামিয়া স্ট্রোক করেছে। পরে এনাম মেডিকেলে গিয়া আমরা সামিয়ার মরদেহ দেখতে পাই। ‘ তিনি অভিযোগ করেন, ‘সামিয়াকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে তারা।পুলিশ জানায়, ‘গতরাতে সাভার ব্যাংক কলোনীতে সামিয়ার শ্বশুরবাড়িতে সামিয়া গলায় ফাঁস নেন। পরে তাকে উদ্ধার করে এনাম মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে এমন ঘটনা ঘটেছে।এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার এস আই জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জেনেছি, বাসায় ঝগড়া করার এক পর্যায়ে সামিয়া তার কক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। দরজা ধাক্কানোর পর না খুললে, দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে সামিয়াকে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তার স্বামী। পরে তিনি তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমরা মরদেহ হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করেছি। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত ধারণা পাওয়া যাবে।