• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১১ অপরাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করলে ইসরায়েলকে শক্তিশালী জবাবের হুঁশিয়ার ইরানের গাজায় এক গণকবরেই মিলল ৩০০ লাশ ইসরায়েলের গভীরে হামলার দাবি হিজবুল্লাহর বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক দুর্নীতির একটা সীমা থাকে, এটা সাগরচুরি বেনজীরের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট প্রভাবমুক্ত থেকে দুদককে অনুসন্ধান করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠক কাতারের সঙ্গে পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই রেয়াত সুবিধা বাতিল, ঢাকা থেকে ১৫ রুটে যত বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া চলমান তাপপ্রবাহ আরো কতদিন থাকবে, যা জানা গেল রংধনুর রফিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক বেনজীরের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান, অগ্রগতির প্রতিবেদন চেয়েছেন হাইকোর্ট পদে থেকেই ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন : হাইকোর্ট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের তফসিল ঘোষণা

শিল্প-কারখানার অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজন সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপ

অসচেতনতা, অসতর্কতা বা অসাবধানতাই শিল্প-কারখানায় অগ্নিকান্ডের মূল কারণ। আর দূর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজন সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপ। যেকোন ধরনের শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা করতে হলে নানা দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় নীতিমালা ও নির্দেশনা বাস্তবায়নের ব্যাপারে সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে দেশের দুর্ঘটনার শিকার কারখানায় পরিলক্ষিত হয় যে, তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না নিয়েই প্রশাসনের নাকের ডগায় কোন নজরদারি ও তদারকি ছাড়াই বড় বড় শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করে চলেছে। যেকোন দূর্ঘটনা ঘটলে তদন্তকারীগণ যে সমস্ত কারণগুলিবিবেচনা করে থাকেন, তাহলো- ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক তার ও ওয়্যারিং, বৈদ্যুতিক সর্ট-সার্কিট, সেলাই মেশিনের মটরের ঘর্ষণ, বৈদ্যুতিক জেনারেটর অতিরিক্ত উত্তপ্ত হলে, বয়লার লিকেজ, জ্বলন্ত বিড়ি/সিগারেটের অবশিষ্টাংশ, জলন্ত আগুনের শিখা থেকে, ওয়েল্ডিং করা, বৈদ্যুতিক আয়রণ ও থিনারের অসতর্ক ব্যবহার, সাবোটাজ বা উদ্দেশ্যমূলক আগুন বা কারখানার ভিতর অসতর্কভাবে কেমিক্যাল সংরক্ষণ হয়েছে কি-না ইত্যাদি। কিন্তু আগুন লাগার জন্য এর চেয়ে বড় একটি কারণ বরাবরই লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে যায়, আর তাহলো ঐ প্রতিষ্ঠানে ব্যাবহৃত এইচভিএসি (হিটিং, ভেন্টিলেশন এন্ড এয়ার কন্ডিশনিং)’টি আসল না নকল? মূলত: আগুন লাগার অন্যতম একটি প্রধান কারণ ত্রুটিপূর্ণ বা নিম্নমানের এসি’র প্রযুক্তিগত সমস্যার মধ্যেই নিহিত।

জানা যায়, অধিকাংশ দূর্ঘটনার মূলে নিম্নমানের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, স্থানীয়ভাবে নির্মিত নকল কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা স্থাপনের কারণে ঘটছে। ঢাকার সাভার ও কেরাণীগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জাহাজ-ভাঙ্গা পূরাতন লোহা লক্কড় ও যন্ত্রাংশ দিয়ে দিয়ে তৈরী হচ্ছে নকল কোল্ড স্টোরেজ, সেন্ট্রাল এসি’র চিলার কুলারসহ নানা যন্ত্রাংশ। যা আন্তর্জাতিক মানের কোম্পানী সমূহের নকল নেমপ্লেট/স্টিকার মেরে দেশের বিভিন্ন নামি-দামি শিল্প-কারখানায় বিক্রি করছে। ফলে ক্যাপাসিটি বিভ্রাট ও বৈদ্যুতিক গোলযোগ হয়ে দূর্ঘটনাগুলি ঘটছে।

এসিতে সাধারণত দুই ধরনের গ্যাস থাকে। এর কোনোটিই আগুন জ্বলতে সহায়তা করে না। তবে আগুনের সংস্পর্শে এলে সে নিজের রূপ পাল্টে উৎপন্ন করে নতুন বিষাক্ত গ্যাস। যা নিঃশ্বাসের সঙ্গে মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে তীব্র যন্ত্রণার পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট শুরু হয় এবং দ্রুত মৃত্যুর কারণ হয়ে ওঠে। মালিকপক্ষ হয়তো কিছু লাভের আসায় কমদামে এসব নিম্নমানের যন্ত্রাংশ/মেশিন কিনছে কিন্তু আদতে তারা হয়তো জানেই না যে, এসির নামে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানে এক একটি এটমবোমা স্থাপন করছে।

এসব নকল যন্ত্রাংশ তৈরীর সাথে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে জানা যায়, এইচভিএসি’র প্রযুক্তিগত সমস্যাগুলি মূলত: বৈদ্যুতিক ক্যাপাসিটির সাথে জ্যামিতিক ও সাংকেতিক মাপ-জোপ ও লোড ক্যালকুলেশন করে তবেই নির্ণয় করা হয়। অন্যথায় বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ ও প্রেসার লেভেল উঁচু স্তরে পৌছে কম্প্রেসার মারাত্মক গরম হয়ে বিস্ফোরীত হয়ে আগুন ধরে যেতে পারে। এসব নকল সেন্ট্রাল এসি ইতিমধ্যে আসল হিসেবে সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। যা প্রতিনিয়তই অনাকংখিত দূর্ঘটনার আশংকা সৃষ্টি করে চলেছে।

বিগত কয়েক বছর যাবত বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের পরিবেশবান্ধব কর্মস্থল নিশ্চিতে শিল্প ইন্ডাস্ট্রিজগুলিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা চালুর জন্য বৈদেশিক বায়াররা চাপ দিয়ে চলেছে। যারা এই শর্ত মানবে না, তারা অর্ডার পাবে না। এসব শর্ত মানতে গিয়ে অনেক ছোট বড় কোম্পানী তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের শীতাতপ নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা করতে গিয়ে শ্রমিকদের জীবনকে দূর্ঘটনার মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

কল-কারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহে অগ্নি-দুর্ঘটনা এবং অন্যান্য দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নেতৃত্বে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে অবিলম্বে সকল শিল্প-কারখানা সরজমিনে পরিদর্শনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং এসকল পরিদর্শনের আলোকে শিল্প-কারখানাসমূহের অবকাঠামোগত, অগ্নি ও অন্যান্য দুর্ঘটনা নিরোধের বিদ্যমান অবস্থা পর্যালোচনা এবং করণীয় নির্ধারণে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নের জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-কে সুনির্দিষ্ট ও আরও দক্ষতার সাথে যথাযত দায়িত্ব পালন করতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.