সাভার প্রতিনিধি :

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন ঘটনায় পৃথক স্থান থেকে ছয় জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এর মধ‍্যে চারজন নারী, তারা সবাই ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়া একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকাল থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত আশুলিয়ার বাইপাইল, পলাশবাড়ী, জামগড়া ছয়তলা, কান্দাইল ও কাঠগড়া পশ্চিমপাড়া থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান।

নিহতরা হলেন- কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী থানার দিয়াডাঙ্গা গ্রামের আমজাদ হোসেনের মেয়ে রিয়া মনি (১৮), দিনাজপুর জেলার সদর থানার মামুদপুর গ্রামের মো. মইনুল রহমানের ছেলে মো. মঞ্জরুল ইসলাম (২২), গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার উত্তর হরিপুর গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে মাসুদ (৩২), বগুড়া জেলার শেরপুর থানার কাজর খামারকান্দি এলাকার মাসুম আলীর স্ত্রী সুস্মিতা খাতুন (২৩), টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী থানার ইসপিনজারপুর এলাকার মো. হাবুল মিয়ার মেয়ে মোছা. সুরমা আক্তার (২০) ও সিরাজগঞ্জ জেলার শাহাজাদপুর থানার রামখেরা গ্রামের সাচ্চু মিয়ার মেয়ে নুপুর (১৬)।

পরিদর্শক মাসুদুর রহমান বলেন, শনিবার বিকাল ৩টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী নিয়ে টানাটানির জেরে মারামারিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত মো. মঞ্জরুল ইসলাম ডিপজল বাস কাউন্টারের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পরিবহন শ্রমিক মানিককে (২০) আটক করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে মঞ্জরুলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।

এদিকে শনিবার বিকাল ৫টার দিকে আশুলিয়ার গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল থেকে রিয়া মনি নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

রিয়া মনি আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় নিজের ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে দুপুরে আশুলিয়ার বাইপাইল মোড় এলাকার পেয়ারলেস হাসপাতালের সামনে থেকে মাসুদ নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে মাসুদের মৃত্যু হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

এর আগে শনিবার ভোর রাতে আশুলিয়ার কান্দাইল পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে সুস্মিতা খাতুন নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত সুস্মিতার স্বামী মাসুম আলী জানায়, তার স্ত্রী ছোট বেলা থেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ৮ রমজান তার বাবা বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হলে তার ভারসাম্যহীনতা আরও বেড়ে যায়।

এর কারণে দুশ্চিন্তা থেকে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করতে পারে বলে দাবি মাসুম আলীর।

শুক্রবার রাত ৯টার দিকে আশুলিয়ার সরকার মার্কেট এলাকার নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতাল থেকে সুরমা আক্তার নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে দাবি পুলিশের।

এছাড়াও শুক্রবার বিকালে আশুলিয়ার কাঠগড়া পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে নুপুর নামে এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

তিনিও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান বলেন, “শুক্রবার বিকাল থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান থেকে আমরা ছয়টি লাশ উদ্ধার করেছি। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং আইনগতভাবে যেভাবে নেওয়া দরকার সেভাবেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”