">
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ লোহিত সাগরে একটি প্রমোদতরি ডুবে যাওয়ার ঘটনায় ১৭ জন নিখোঁজ রয়েছে, যাদের মধ্যে বিদেশি নাগরিকও আছেন। এ ছাড়া ২৮ জনকে ইতিমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। মিসরের কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য জানিয়েছে।
লোহিত সাগর প্রদেশের গভর্নর জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় শনিবার ভোর সাড়ে ৫টায় ‘সি স্টোরি’ নামের প্রমোদতরিটি থেকে বিপদ সংকেত পাওয়া যায়।এটি মারসা আলম শহরের কাছে গালিব বন্দর থেকে পাঁচ দিনের ডাইভিং ভ্রমণে ৩১ জন পর্যটক ও ১৪ জন ক্রু নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল। আগামী শুক্রবার ২০০ কিলোমিটার উত্তরে হুরগাদা শহরে এর নোঙর করার কথা ছিল।
গভর্নর মেজর জেনারেল আমর হানাফি জানান, মিসরের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘আল ফাতেহ’ ও সামরিক বিমান নিখোঁজদের সন্ধানে প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। নৌবাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর সমন্বয়ে নিবিড় অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের মারসা আলমের দক্ষিণে ওয়াদি আল-গেমাল এলাকায় পাওয়া গেছে এবং তারা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো এই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে কিছু জানায়নি। তবে শনিবার মিসরীয় আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরে ঝোড়ো আবহাওয়ার কারণে রবি ও সোমবার সামুদ্রিক কার্যক্রম এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিল।
মারসা আলমের স্থানীয় কাউন্সিল জানিয়েছে, ‘সি স্টোরি’র ক্রুরা সবাই মিসরীয়।পর্যটকদের মধ্যে পাঁচজন স্প্যানিশ, চারজন ব্রিটিশ, চারজন জার্মান ও দুজন মার্কিন নাগরিক ছিলেন। তবে কারা উদ্ধার হয়েছেন এবং কারা এখনো নিখোঁজ, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, তারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং ব্রিটিশ নাগরিকদের ও তাদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করছেন। এ ছাড়া চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম মিসরে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, তাদের দুই নাগরিক সুস্থ আছেন। ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, তাদের একজন নাগরিক নিখোঁজ রয়েছে।পোলিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র পাওয়েল রনস্কি বলেছেন, কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য রয়েছে, দুই পর্যটকের পোলিশ নাগরিকত্ব থাকতে পারে।
‘সি স্টোরি’র মালিক ও পরিচালনা প্রতিষ্ঠান ডাইভ প্রো লাইভঅ্যাবোর্ডের পক্ষ থেকেও এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তাদের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ২০২২ সালে নির্মিত ৪৪ মিটার দীর্ঘ এই প্রমোদতরিতে চারটি ডেক ও ১৮টি কেবিন রয়েছে, যা সর্বোচ্চ ৩৬ জন যাত্রী বহন করতে পারে।
মারসা আলম লোহিত সাগরের দক্ষিণ উপকূলের একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য, যা বিখ্যাত প্রবাল প্রাচীরসহ ডাইভিং স্পটের জন্য পরিচিত। এই মাসের শুরুতে মারসা আলমে আরেকটি নৌযান ডুবে যাওয়ার ঘটনায় ৩০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছিল, তবে কোনো প্রাণহানি হয়নি। এর আগে জুন মাসে একই ধরনের দুর্ঘটনায় নৌযান ডুবে যাওয়ার আগে দুই ডজন ফরাসি পর্যটককে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। গত বছর প্রমোদতরিতে অগ্নিকাণ্ডে তিনজন ব্রিটিশ পর্যটক মারা যান।
সূত্র : বিবিসি, এএফপি
Leave a Reply