">
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনা ভারতের বিখ্যাত আজমীর শরীফের নিচে মন্দির আছে এমন দাবি করে আদালতে পিটিশন দায়ের করেছে। গত সেপ্টেম্বরে এই পিটিশন দায়ের করার পর আজমীরের একটি আদালত দাবিটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বুধবার (২৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
রাজস্থানের আজমীরের একটি আদালত ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ এবং কেন্দ্রকে এ বিষয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে।ওই পিটিশনে দাবি করা হয়েছে, আজমীরে সুফি সাধক মঈনুদ্দিন চিশতির দরগায় একটি শিবমন্দির রয়েছে। আদালতকে আবার ঘটনাস্থলে পূজার অনুমতি দিতে বলা হয়েছে পিটিশনে।
ডানপন্থী দল হিন্দু সেনার প্রধান বিষ্ণু গুপ্ত আজমীর শরীফ নিয়ে ওই পিটিশন দায়ের করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আজমীর শরীফকে সংকট মোচন মহাদেব’ মন্দির হিসেবে ঘোষণা করা উচিত।
সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘দরগায় যদি কোনো ধরনের নিবন্ধন থাকে, তাহলে তা বাতিল করা উচিত। ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থাকে (এএসআই) দিয়ে জরিপ করাতে হবে এবং হিন্দুদের সেখানে পূজা করার অধিকার দিতে হবে।’
আবেদনকারীর অ্যাডভোকেট যোগেশ সিরোজা বলেছেন, সিভিল বিচারক মনমোহন চন্দ্রের আজমীর দরগা কমিটি, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ (এএসআই) অফিসে তাদের প্রতিক্রিয়া জানতে নোটিশের আদেশ দিয়েছেন। এমনকি বারাণসী, মথুরা ও ধরর ভোজশালাসহ সারা দেশের বড় মাজারগুলোর ক্ষেত্রেও একই দাবি তুলেছে হিন্দু সেনা।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, আদালতের আদেশটি উত্তরপ্রদেশের সামভালে সহিংসতার পরের ঘটনা। মাত্র দুই দিন আগে সেখানে মসজিদের নিচে মন্দির থাকার দাবি নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষে চারজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়। একটি পুরনো মন্দির ধ্বংস করে সেখানে মসজিদটি তৈরি করা হয়েছিল বলে আদালতের দ্বরস্থ হয়েছিলেন হিন্দুত্ববাদী বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। এরপর আদালত তাদের পিটিশনের ভিত্তিতে সেখানে জরিপ চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল।
আদালতে দায়ের করা ওই পিটিশনে ১৯১১ সালে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক হর্বিলাস সার্দারের লেখা একটি বইয়ের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে।এতে বলা হয়েছে, আজমীর শরীফের চারপাশে হিন্দু ধর্মের মৃৎশিল্প ও খোদাই রয়েছে।
‘আজমির : ঐতিহাসিক এবং বর্ণনামূলক’ বইটিতে দাবি করা হয়েছে, একটি শিব মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দিয়ে আজমীর শরীফ তৈরি করা হয়েছে। পিটিশনে আরো অভিযোগ করা হয়েছে, ওই স্থানের গর্ভগৃহের মধ্যে একটি জৈন মন্দির রয়েছে। তবে দরগা কমিটি এই দাবি অস্বীকার করেছে।
আঞ্জুমান সৈয়দ জাদগানের সেক্রেটারি সৈয়দ সারওয়ার চিশতী বলেন, আফগানিস্তান থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়াসহ সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ আসেন। এখানে বহুত্ববাদ প্রচার হয়। এ ধরনের কাজ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও জাতির পরিপন্থী। আজ তিন পক্ষকে নোটিশ দিয়েছেন আদালত।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা দেখব আমরা কী করতে পারি। কাশী, মথুরার প্রাচীন মসজিদগুলো লক্ষ্য করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড ভালো নয়।’ মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২০ ডিসেম্বর।
সূত্র : এনডিটিভি
Leave a Reply