• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৭ অপরাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ Mostbet 314 Casino Azərbaycanda Bukmeker Kontoru Mostbet Azerbaycan Yukle Android Os Apk Və Ios App-d Mostbet Az-90 Kazino Azerbaycan ən Yüksək Bukmeyker Rəsmi Sa 0898520760 ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করলে ইসরায়েলকে শক্তিশালী জবাবের হুঁশিয়ার ইরানের গাজায় এক গণকবরেই মিলল ৩০০ লাশ ইসরায়েলের গভীরে হামলার দাবি হিজবুল্লাহর বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক দুর্নীতির একটা সীমা থাকে, এটা সাগরচুরি বেনজীরের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট প্রভাবমুক্ত থেকে দুদককে অনুসন্ধান করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠক কাতারের সঙ্গে পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই রেয়াত সুবিধা বাতিল, ঢাকা থেকে ১৫ রুটে যত বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া চলমান তাপপ্রবাহ আরো কতদিন থাকবে, যা জানা গেল রংধনুর রফিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক

আড়ত ভাঙলে পাঁজর ভাঙবে ব্যবসায়ীদের

বিশেষ প্রতিনিধি কারওয়ান বাজার পাকা আড়ত ভবনের যখন যাত্রা, তখন থেকেই সেখানে ব্যবসা পাতেন জামালপুরের মনির হোসেনের বাবা। ভবনের নিচতলার ৪১ নম্বর আড়তে পেঁয়াজের ব্যবসা তাদের। ভবনটি ভাঙলে ব্যবসায় কেমন প্রভাব পড়বে– এমন প্রশ্নে মনির হোসেন বলেন, ‘বাজার যখন থেকে চালু হয়েছে, তখন থেকেই আমার বাবা এখানে ব্যবসা শুরু করেন। আমি নিজেই ব্যবসা করছি ২৫ বছর। কারওয়ান বাজারের আষ্টেপৃষ্ঠে লেগে আছে আবেগ, নানা স্মৃতি। এখান থেকে তুলে দিলে পরিবার নিয়ে বড় সংকটে পড়ব। কারণ, নতুন জায়গায় এখানকার মতো ব্যবসা জমবে না।’

গাজীপুর ও পার্বত্যাঞ্চল থেকে লেবু এনে এ আড়তে বেচেন নোয়াখালীর সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা ছোট ব্যবসায়ী। সরকারের ব্যাংক ঋণ নিয়ে তা মেরে দিই না। সৎভাবে ব্যবসা করি। আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীদের এখান থেকে উচ্ছেদ করা হলে আর ঘুরে দাঁড়ানো যাবে না।সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও ঢাকা উত্তরের সিটি মেয়র আতিকুল ইসলাম রোজার ঈদের পর কারওয়ান বাজার পাকা আড়ত ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন।এ পটভূমিতে মনির আর সাইফুলের মতো কারওয়ান বাজারের শত শত কাঁচামাল ব্যবসায়ীর চোখেমুখে এখন উচ্ছেদের ভীতি। সত্যি সত্যি কি ভেঙে ফেলা হবে প্রাচীন এ ব্যবসা কেন্দ্র– এমন আলোচনা কারওয়ান বাজারের ছোট-বড় প্রায় সব ব্যবসায়ীর মুখে মুখে। কারও কারও ধারণা, কয়েকবার ভাঙার উদ্যোগ নিয়েও সরকার যেহেতু ভাঙেনি, এবারও হয়তো ছাড় দেবে। টিকে যাবে ভবনটি। তাদেরও ব্যবসার জায়গাটি হারাতে হবে না।বর্তমানে দ্বিতল কারওয়ান বাজার পাকা আড়ত ভবনটি হওয়ার কথা ছিল ১০ তলা। এর বয়স হয়েছে ৩৫ থেকে ৩৬ বছর। যেখানে সাধারণত একটা ভবনের মেয়াদ ১০০ বছর থাকে। তাহলে তিন ভাগের দুই ভাগ বয়স থাকতেই কীভাবে এটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়– এমন প্রশ্ন তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। 

ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের প্রায় সব ব্যাংকের শাখা রয়েছে কারওয়ান বাজারে। রয়েছে কয়েকটি ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং। কাঁচামালের আড়ত ঘিরে এখানে গড়ে উঠেছে মাছ, মুরগি, ডিম, ফল, চালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের আড়ত। রয়েছে মসলা ও ডালজাতীয় পণ্যের আড়ত। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যাপারীরা পণ্য এনে এখানে বেচাকেনা করেন। আর এসব টাকার লেনদেন হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। ফলে আড়ত সরালে শুধু ব্যবসায়ী নন, এসব ব্যাংকেও লেনদেন কমে যাবে। তাই কারওয়ান বাজার সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি সরকার পুনর্বিবেচনা করবে বলে মনে করেন তারা।কারওয়ান বাজার থাকবে কিনা, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন আলু ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘একটা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে বাজার ভেঙে দেওয়ার সংবাদ প্রচার হয়েছিল কয়েক দিন আগে। ওই সংবাদের পোস্টে অনেকেই বাজার ভেঙে দেওয়ার পক্ষে মন্তব্য করেন, যা দেখে খুব কষ্ট পেয়েছি। কারণ এখানে আমরা যারা ব্যবসা করি, তারা প্রত্যেকেই এ আয় দিয়ে পরিবার চালায়। ভেঙে দিলে সবার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।’ 

চার দশকের বেশি সময় কারওয়ান বাজারে কাঁচামালের আড়তের ব্যবসা করেন খোরশেদ আলম। পাকা ভবনের নিচতলার ১ নম্বর আড়তের এ ব্যবসায়ী বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর কারও হাত নেই। তবে দীর্ঘ এ সময়ে কাঁচামালের আড়তগুলো লাখ লাখ মানুষের জীবিকার একমাত্র ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে। এ আড়ত ঘিরে আশপাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য হোটেল-রেস্তোরাঁ, ব্যাংক-বীমা। এখন আড়ত ভবন ভেঙে ফেললে সব খাতের ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।তিনি বলেন, গাবতলীর যেখানে আড়ত নেওয়া হবে বলা হচ্ছে, সেখানে শাটারযুক্ত আড়ত করা হয়েছে। তবে কখনোই কাঁচামালের ব্যবসা শাটারযুক্ত আড়তে করা যায় না। কাঁচামালের আড়ত থাকতে হয় খোলামেলা। ট্রাক ঢোকার জন্য চারপাশে রাখতে হয় পর্যাপ্ত জায়গা। ভবনটির আড়ত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান সুজন বলেন, সারাদেশের প্রান্তিক কৃষক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে কয়েকশ কোটি টাকা নগদ ও দাদন (ব্যবসার জন্য অগ্রিম টাকা দেওয়া) রয়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্রেতাদের কাছে বকেয়া ও ব্যাংকে ঋণ রয়েছে শত শত কোটি টাকা। এ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হলে বিশাল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে সবাই। একই সঙ্গে কর্মহীন হয়ে পড়বে শ্রমিক, ভ্যানচালকসহ লাখ লাখ মানুষ।সাইফুর রহমান বলেন, বর্তমানে পণ্যমূল্যে যে অস্থিরতা চলছে, এ আড়ত সরালে তা আরও বেগবান হতে পারে। কারওয়ান বাজারে কত লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে, কত কোটি টাকার কেনাবেচা হয়– এসব বিস্তারিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেননি মেয়র। তাদের চিন্তা শুধু কীভাবে ব্যবসায়ীদের সর্বস্বান্ত করা যায়। আমার বিশ্বাস, এ বাজারের নিরীহ শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বাস্তব জীবনের চিত্র দেখলে প্রধানমন্ত্রী এখান থেকে বাজার সরাবেন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.