বিশেষ প্রতিনিধি ঢাকার বিমানবন্দর মোড় থেকে গাজীপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের নকশায় বিভিন্ন ত্রুটির বিষয়টি উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। এসব ‘ত্রুটির’ কারণে প্রকল্পটির সুফল পাবে না গাজীপুরের মানুষ, উল্টো ভোগান্তি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। বুধবার গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে বিআরটি প্রকল্প নিয়ে গণশুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিআরটি প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ব্যবহার-সংক্রান্ত প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আজকে ভিডিও প্রেজেন্টেশনে প্রকল্পের যে ডিজাইনটি দেখানো হয়েছে, তার সঙ্গে বাস্তবে মিল নেই। বিআরটির বাস নির্বিঘ্নে চলাচল করলেও নিচে যানজট বাড়বে, জলাবদ্ধতা দেখা দেবে, পথচারীর হাঁটার ফুটপাত সংকুচিত হওয়ায় তারা সড়কে চলতে বাধ্য হবে। এ কারণে দেখা দেবে দুর্ঘটনার শঙ্কা। প্রকল্পটিতে নানা অসংগতি ও ভুল করায় একদিকে যেমন অর্থের অপচয় হচ্ছে, তেমনি মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। এর সঙ্গে জড়িত ডিজাইনার ও প্রকৌশলীদের বিভাগীয় মামলা ও গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি। প্রকল্পের ত্রুটি তুলে ধরে জাহাঙ্গীর বলেন, টঙ্গী থেকে গাজীপুর শহর পর্যন্ত ১১৩টি সাবরোড করার কথা ছিল। কিন্তু করা হয়েছে ৫৬টি। ড্রেনেজ ব্যবস্থায় ত্রুটি নিয়ে ২০১৮ সালে জানানো হলেও তা দূর করা হয়নি। অনেক ক্ষেত্রেই পথচারীদের চলাচলের ফুটপাথের ওপরে ব্রিজের খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। মানুষকে ফুটপাত ছেড়ে সড়কে নামতে হওয়ায় যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
প্রধান অতিথি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম শামীম আক্তার অনুষ্ঠানে যেসব সমস্যার কথা উঠে এসেছে, তা নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেন।গণশুনানিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিআরটি প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মুনিরুজ্জামান, প্রকল্প পরিচালক এএসএম ইলিয়াস, গাজীপুর ডিসি আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম প্রমুখ। ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর একনেকে বিআরটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। এরপর কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেটিও হয়নি। চলতি বছরের আগস্টে কাজ শেষ হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।