আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া বগুড়া শহর আবারও ইজিবাইক-অটোরিকশার দখলে। যানজটমুক্ত রাখতে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানছে না কেউ। দিন-রাত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। কিছুদিন শহরে প্রবেশ বন্ধ থাকলেও আবারও দখলে নিয়েছে অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক। যেখানে সেখানে গাড়ি-অটোরিকশার পার্কিং, সড়কের উপর ভ্রাম্যমাণ দোকান, ফুটপাত দখলসহ নানা কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বগুড়া শহরে। এসব থেকে নিরসন পেতে ইজিবাইক অটোরিকশা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা পুলিশ। তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শহরবাসী বলছেন, যানজটের আরেক কারণ হচ্ছে শেরপুর উপজেলা থেকে বগুড়া শহরে ভেতর দিয়ে চলাচলরত করতোয়া গেটলক নামের বাস।জানা যায়, উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলা শহরের মধ্যে বগুড়া সবচেয়ে জনবহুল শহর। একই সাথে বাণিজ্যিক শহর বলে জেলায় প্রতিদিন উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য জেলা থেকে প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ মানুষের সমাগম হয়ে থাকে। তারা ব্যবসা, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ নানা কাজে বগুড়ায় আসেন। ফলে বগুড়া শহর সবসময় সরগরম থাকে। এদিকে দিন দিন পাল্লা দিয়ে শহরের অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা বেড়েই চলছে। শহরের চলাচলরত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ট্রাফিক আইন মানছে না। ইচ্ছামতো যত্রতত্র রিকশা স্ট্যান্ড বসিয়ে যানজটের সৃষ্টি করছে। অবৈধ অটোরিকশার জটে অতিষ্ঠ সাধারণ জনগণ। এদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে দীর্ঘ যানজটে পড়তে হয়। এতে করে ১০ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগছে ঘণ্টারও বেশি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় অভিযান চালালেও কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। বিশেষ করে মফিজ পাগলা মোড়, ঠনঠনিয়া, পিটিআই, সরকারি কলেজ, ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড় এলাকায় অস্থায়ীভাবে সিএনজি, ব্যাটারিচালিত রিকশা, চার্জারে চালিত বিভিন্ন অটোগাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। একই সঙ্গে শহরের দত্তবাড়ি, বড়গোলা, থানা মোড়, সাতমাথা, খান্দার, রেলগেট, নামাজগড়, টিনপট্টি মোড়, তিনমাথা রেলগেট, চেলোপাড়া মোড়, জলেশ্বরীতলাসহ সকল সড়কেই যানজট লেগে থাকে। এসব পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। এদিকে, বগুড়ার শেরপুর থেকে চলাচল করে করতোয়া গেটলক নামের বাস। বাসগুলো প্রতিদিন শহরের ভেতর দিয়ে চলাচল করার কারণেও যানজট লেগে যায়।জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সূত্র জানায়, শহরে যানজট ও জনদুর্ভোগ কামানোর উদ্দেশে অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করতে দেওয়া হবে না। এজন্য শহরে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট রয়েছে। পাশাপাশি কেউ নিয়ম ভেঙে শহরে প্রবেশ করলে সেই সব যানবাহন আটক করা হচ্ছে। যানজট নিরসন ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমানো ট্রাফিক পুলিশের মূল লক্ষ্য। বগুড়া শহরের ব্যবসায়ী আতোয়ার হোসেন জানান, ব্যস্ততম এই শহরে অসংখ্য অটোরিকশা। সড়কের এক পাশ থেকে অপর পাশে পার হওয়া কষ্টসাধ্য। প্রতিদিন শহরবাসী যানজটে পড়ছে। অটোরিকশা ও ইজিবাইকগুলো বেআইনিভাবে শহরে যত্রতত্র স্ট্যান্ড বানিয়ে যাত্রী ওঠানামা করে। যার ফলে আমাদের প্রতিদিন যানজটে পড়তে হয়। জেলা পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, বগুড়াকে উত্তরবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র বলা হয়। আমরা শহরের যানজট নিরসনে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি। ট্রাফিকের জনবল কম হওয়ায় ব্যস্ততম শহরে মাঝে-মধ্যে একটু যানজট লেগে যায়। তবে যানজটের মূল কারণ হচ্ছে অধিক পরিমাণ অবৈধ অটোরিকশা বেড়ে যাওয়া। এ ছাড়াও শহরের রাস্তার ধারণ ক্ষমতার অধিক যানবাহন চলাচলের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসনে শহরে ইজিবাইক অটোরিকশা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জেলা পুলিশ।