মানবপাচারের সঙ্গে দুটি বিদেশি এয়ারলাইন্সের কর্মী জড়িত বলে প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। মঙ্গলবার দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে সিআইডি প্রধান মাহবুবুর রহমান জানান, মানবপাচার চক্রকে ধরতে তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। এরইমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে, ১৭১ জনকে। বিভিন্ন দেশে পলাতক ৬ জনকে ধরতে সহায়তা নেয়া হচ্ছে ইন্টারপোলের।
মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান মাহবুবুর রহমান জানান, পলাতকদের মধ্যে ৬ জনকে ধরতে ইন্টারপোলের সাহায্য নেয়া হচ্ছে। চেষ্টা চলছে, সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আইনের আওতায় আনার।
মাহবুবুর রহমান বলেন, মানবপাচারের তদন্তে নেমে এর সঙ্গে দুটি এয়ারলাইন্সের কর্মীদের সম্পৃক্ততা পেয়েছে সিআইডি।
মানবপাচার চক্রের সাথে ২টি বিদেশি এয়ারলাইন্সের লোকও জড়িত বলে প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। এয়ারলাইন্স দুটির নাম প্রকাশ না করলেও সিআইডি প্রধান বলেছেন, সেগুলো বাংলাদেশের কোনো কোম্পানি নয়। তদন্তে দেখা যায়, এ দুটি এয়ারলাইন্স সিঙ্গেল টিকেটে লোক পাঠিয়েছেন, যা অন্যায়। কোনো সেমিনারে, চিকিৎসা নিতে এমনকি ভ্রমণে গেলেও কখনো সিঙ্গেল টিকেটে যাওয়ার কথা নয়। ওই দুটি এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব তদন্তেও বিষয়টি দেখতে পেয়েছে বলে জানান মাহবুবুর রহমান
এ ক্ষেত্রে ইমিগ্রেশনের কোনো দায় ছিল কি না জানতে চাইলে মাহবুবুর রহমান বলেন, “ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের যাওয়া এবং আসার দুটি টিকিট দেখানো হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে রিটার্ন টিকিটটি সঠিক নয়। এটা ওই এয়ারলাইন্সের লোকজনও জানে এবং তারা জড়িত।
ইউরোপে যাওয়ার আশায় ট্রানজিট হিসেবে লিবিয়ায় যান অনেক বাংলাদেশী। সেখানে দালালদের খপ্পরে পরে নি:স্ব হন অনেকেই।
২০১৯ সালের ২৬ মে মাসে লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যার পর মানবপাচারকারী ধরতে কাজ শুরু করে সিআইডি। ওই ঘটনার পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ২৬টি মামলা হয়েছে। ২৫টির তদন্ত করছে সিআইডি। এসব মামলায় ২৯৯ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং ১৭১ জন গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে এখনো অনেক পাচারকারী বিভিন্ন দেশে পলাতক আছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সেসব মামলার পলাতক ছয় আসামির সন্ধান চেয়ে দুদিন আগে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করেছে বাংলাদেশ। এরা হলেন- ইকবাল জাফর, তানজিরুল, স্বপন, শাহাদাত হোসেন, নজরুল ইসলাম মোল্লা ও মিন্টু মিয়া।
তাদের মধ্যে নজরুলের বাড়ি মাদারীপুরে, শাহাদাতের ঠিকানা ঢাকায়। বাকি চারজনই কিশোরগঞ্জের বলে ইন্টারপোলের নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে।
মাহবুবুর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত তদন্তে ঘুরে ফিরে ইন্টারপোলে দেওয়া ছয়জনের নাম এসেছে। তাদের মধ্যে তানজিমুল ইতালিতে অবস্থান করছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। আর বাকিদের অবস্থান জানতে পারিনি বলেই ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছি।