যাত্রী সেজে প্রথমে বাস ছিনতাই পরে সেই বাসেই ডাকাতি। বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) এমনই এক চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাজধানীসহ ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন স্থানের যাত্রীদের বাসে তুলে হাত বেঁধে সর্বস্ব লুট করে নেয় এই চক্রের সদস্যরা। এমনকি নির্যাতনও করে যাত্রীদের।
যাত্রীদের নামিয়ে যখন বাস বন্ধের জন্য ধোয়া মোছার কাজ করছে চালক এবং হেলপার তখনই শ্যামলীতে বাস দরজা বন্ধ করে চালক এবং হেলপারকে বেঁধে ফেলে ডাকাত সদস্যরা। এরপরই নিজেরাই গাড়ি চালিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রী তুলে হাত-পা বেঁধে সবকিছু কেড়ে নেয় ডাকাত সদস্যরা।
গত শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে খিলক্ষেত থেকে ১৫-২০ জন যাত্রীকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তদন্তে বেরিয়ে এর আগের দিন শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে বিমানবন্দর থেকে অন্য একটি গাড়ি ছিনতাই করে একইভাবে ডাকাতি করে এই সদস্যরা।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন মনিরুল, নূরনবী ওরফে নবী সোহেল এবং জিহাদ। এ সময় তাদের কাছ থেকে হাত বাঁধার গামছা উদ্ধার এবং কাপড় উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, এই চক্রের সাথে ৩০ জনের অধিক জড়িত। তারা সবাই পেশাদার ডাকাত সদস্য।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, শনিবার রাত ১০টার সময় তারা উত্তরা এপিবিএনের মাঠ থেকে আরেকটি বাস ডাকাতি করেছে। সেখান থেকে বাসটা নিয়ে হেলপার, ড্রাইভার, সুপারভাইজারকে হাত-পা বেঁধে ফেলে দিয়েছে তারা।
পুলিশ জানায়, শনিবার সকাল আনুমানিক আট ৮টায় খিলক্ষেত থানাধীন ৩০০ ফিট এলাকা থেকে খিলক্ষেত থানা পুলিশ একে ট্রাভেলসের একটি বাস থেকে ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রীকে হাত-পা বাঁধা চোখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে। যেখানে বাসটির চালক হেলপার সুপারভাইজার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও যাত্রী ছিল।
উদ্ধার হওয়া যাত্রীরা জানান আনুমানিক আড়াইটার দিকে, শ্যামলী থেকে একে ট্রাভেলসের কাউন্টারের সামনে থেকে ১০ থেকে ১২ জন সশস্ত্র ডাকাত জোরপূর্বক বাসের দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে তাদের হাত-পা বেঁধে বাসটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। পরবর্তীতে তারা ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে যাত্রীদের বাসে তুলে তাদেরকে জিম্মি করে তাদের সাথে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ফোন স্বর্ণ অলংকার এবং মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
উদ্ধার যাত্রীদের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ আরও একটি গাড়িকে শনাক্ত করে যেটি আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহন নামে পরিচিত তারাই আগের রাত শুক্রবার একই কায়দায় রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে বাসটি ছিনতাই করে আশুলিয়া বাইপাইল সাভার গাবতলী হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে। পথে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে সুবিধাজনক স্থানে নামিয়ে দেয়।
এই দলের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর খিলক্ষেত এবং আদাবর থানায় একাধিক মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।