বাংলা সিনেমার সোনালি দিনের নায়ক ওয়াসিম মারা গেছেন। শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজধানীর শাহাবদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিলো ৭৪।
নায়ক ওয়াসিমের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৪৭ মিনিটে জায়েদ খান তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান ওয়াসিম ভাই।
জায়েদ খান আরও বলেন, ওয়াসিম ভাইকে এখন গোসল করানো হচ্ছে। এরপর তার মরদেহ ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হবে। রোববার (১৮ এপ্রিল) বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বনানী কবরস্থানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানেই তাকে দাফন করা হবে।
১৯৭২ সালে এস এম শফী পরিচালিত ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’ সিনেমায় ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিষেক হয়েছিল ওয়াসিমের। ওই সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসেবেও কাজ করেন তিনি।
নায়ক হিসেবে তার প্রথম সিনেমা ‘রাতের পর দিন’। মহসিন পরিচালিত এ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৪ সালে। মুক্তির পর রাতারাতি সুপারস্টার বনে যান ওয়াসিম। এরপর অ্যাকশন এবং ফোক-ফ্যান্টাসি ধাঁচের অনেকগুলো সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
লম্বা সময় ধরে লাইট-ক্যামেরার সামনে নেই ওয়াসিম। সিনেমা সংশ্লিষ্ট কোনো অনুষ্ঠানেও দেখা যায় না তাকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে শয্যাশায়ী এ অভিনেতা। মূলত ব্রেন এবং লিভারের সমস্যায় আক্রান্ত ওয়াসিম ছিলেন জানা গেছে।
২০১০ সাল পর্যন্ত টানা অভিনয় করেছেন ওয়াসিম। শাবানা, ববিতা, কবরী, সুচরিতা, অঞ্জু ঘোষের বিপরীতি অভিনয় করেছেন তিনি। ওয়াসিম অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’, ‘রাতের পর দিন’, ‘দোস্ত দুশমন’, ‘দ্য রেইন’, ‘রাজদুলারী’, ‘বাহাদুর, ‘মানসী’, ‘সওদাগর’, ‘নরম গরম’ ইত্যাদি।
১৯৫০ সালের ২৩ মার্চ চাঁদপুর জেলার মতলব জন্মগ্রহণ করেন এ অভিনেতা।
এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার রাতে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলা সিনেমার মিষ্টি মেয়ে খ্যাত কবরী। গত ৫ এপ্রিল করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরপরই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ৮ এপ্রিল তাকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সেখান চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিরবিদায় নেন এ কিংবদন্তি অভিনেত্রী।