অনলাইন ডেস্কঃ ‘আপনি কাদের মির্জাকে গিয়ে বলে দেন, সে যেন আর বাড়াবাড়ি না করে’- এমন করে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার আলোচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে ‘কড়া বার্তা’ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সম্প্রতি নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে এ বার্তা দেন তিনি। আর এ বার্তার পর আলোচিত কাদের মির্জা শান্ত রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দলীয় সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নোয়াখালী ফেরার পর এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী কোম্পানীগঞ্জ যান। তিনি আবদুল কাদের মির্জা ও তার প্রতিপক্ষ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাগনে উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশিদের (মঞ্জু) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি দলের শীর্ষ পর্যায়ের বার্তা তাদের কাছে পৌঁছে দেন।
এদিকে, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটি কাটছাঁট করে ত্যাগী নেতাদের নিয়ে নতুন কমিটি তৈরির কাজ চলছে বলে জানা গেছে। তবে নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পৌরসভা নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করতে গিয়ে ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দলের এমপিরা দরজা খুঁজে পাবে না’ মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন কাদের মির্জা। ওই বক্তৃতায় তিনি জাতীয় নির্বাচন, বৃহত্তর নোয়াখালীতে দলের দুই সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী ও নিজাম উদ্দিন হাজারীর বিরুদ্ধে নিয়োগবাণিজ্য, টেন্ডারবাজিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। দাবি তোলেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটি বাতিলেরও।
অভিযোগ ওঠে, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী তার ঘনিষ্ঠজনদের প্রাধান্য দিয়ে কমিটি তৈরি করেছেন, যাতে যুব ও ক্রীড়া সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছিল তার ছেলে আতাহার ইসরাক সাবাব চৌধুরীকে। এছাড়া ৭৫ সদস্যের প্রস্তাবিত ওই কমিটিতে অনেক বিতর্কিত ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্তিরও অভিযোগ রয়েছে। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে দুই দফায় সংশোধন করে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি কেন্দ্রে দাখিল করা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে সরাতে হবে। এমন দাবি গত প্রায় ৬ মাস ধরেই করছেন কাদের মির্জা।
এ প্রসঙ্গে একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা হলেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, আর ওবায়দুল কাদের হলেন সাধারণ সম্পাদক। ওনারা যদি মনে করেন নোয়াখালীর কমিটি পরিবর্তন করা দরকার, সে ক্ষেত্রে আমার কি কিছু করার আছে?’
প্রসঙ্গত, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর। ওই সম্মেলনে এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হন সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী।