৬ দফা বিশেষজ্ঞ দলের সৃষ্টি নয়, এটি জাতির পিতার দলিল: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা কোনো বিশেষজ্ঞ দলের সৃষ্টি নয়, বরং এ দলিল জাতির পিতা এককভাবেই প্রণয়ন করেছিলেন। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বিআইসিসি মিলনায়তনে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি জাতীয় বিমা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় বিমা খাতকে ডিজিটালাইজড করার তাগিদ দেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, সবার জীবনব্যবস্থার সুরক্ষা দিতেই সর্বজনীন পেনশন চালু করা হচ্ছে।
ষাটের দশকে পূর্ব পাকিস্তানে চলছিল আইয়ুর খানের শাসনামল। রাজনীতি নিষিদ্ধের ওই সময়েই ১৯৬০-এর ১ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বিমা কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন আলফা লাইফ ইনস্যুরেন্সে। জেলায় জেলায় বিমার কাজের আড়ালেই তিনি চালিয়েছিলেন রাজনৈতিক কর্মকা-।
তাৎপর্যপূর্ণ সেই দিনের স্মরণে ২০২০ থেকে পালিত হচ্ছে জাতীয় বিমা দিবস। এ বছর ৫ বিশিষ্টজনকে বিমা সম্মাননার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তুলে দেওয়া হয় প্রতিবন্ধীদের জন্য চালু করা ‘বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বিমার’ দলিল। দেশের বিমার ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার বিমার চাকরির সুবাদেই ছয় দফা পেয়েছিল দেশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার বেশ কয়েকটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অনুমতি দিয়েছে। এগুলো আরও কার্যকর করতে হবে। আমরা স্বাস্থ্যবিমা চালু করতে চাই। এজন্য কাজ শুরু করতে হবে।
বিমা জনপ্রিয় করাসহ এর সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, অনেকেই ব্যবসা করতে গিয়ে বিমা করে। এরপর ভুল বা অসত্য তথ্য দিয়ে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রিমিয়াম থেকে টাকা দাবি করে। হয়তো এই দাবি সঠিক নয়। এসব বিষয়ে আমাদের সর্তক হতে হবে। যারা এসব পরীক্ষা করে তাদের ভালোভাবে শিক্ষা দিতে হবে। তারা যেন আবার অন্য কোনোভাবে ওই অল্প ক্ষতিকে বড় ক্ষতি করে না দেখায়।
আবার গ্রাহক যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেই বিষয়ে খেয়াল রাখারও অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিমা মানে হচ্ছে একটা আমানত। তাই কেউ যেন তার প্রাপ্য চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার না হয়। প্রাপ্য যেন সহজেই পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। বিমা নিয়ে নানা হয়রানি হয়- এসব বন্ধ করতে হবে। বিমা দাবিতে অনিয়ম দূর করতে প্রযুক্তির ব্যবহারের তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
১৯৬০ সালের ১ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানের আলফা ইন্স্যুরেন্সে বঙ্গবন্ধুর যোগদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দীর্ঘ ২৩ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করে বাঙালি জাতিকে ধাপে ধাপে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেন। যখন পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলো তখন তিনি আলফা ইন্স্যুরেন্সে কর্মরত অবস্থায়ও বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের সংগঠিত রেখেছেন। চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহসহ দেশের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বঙ্গবন্ধুর সহযোগিতায় কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছিলেন।