বিশেষ প্রতিনিধি রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে পাওয়া অগণিত লাশের মাঝে একমাত্র নারী ছিলেন সেলিনা পারভীন। আলবদর বাহিনী বাসা থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করে এই শহীদ সাংবাদিককে। অথচ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটে আগামী প্রজন্মের কাছে এই গুণী সাংবাদিককে যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে তাঁকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সাহসী সাংবাদিকতা পদক’ বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তারা এই আহবান জানান। এই পদক প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু।
অনুষ্ঠানে সম্মালিত অতিথি ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাষ্টি মফিদুল হক এবং মানবাধিকারকর্মী ও ডাকসুর সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মাহফুজা খানম। এছাড়া অনুষ্ঠানে শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীনের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তার পুত্রবধু কাজী রাকসিন্দা জাবীন, ভাগনী মোহেরুননেসা ইসলাম কঙ্কা ও কামরুননেসা ইসলাম সম্পা বক্তব্য রাখেন। ।করোনার কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে গত দুই বছর এই পদক প্রদান স্থগিত ছিল। এ বছর ২০২০ সালে শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তর টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক কাবেরী মৈত্রেয় এই পদকের জন্যে নির্বাাচত হন। আর ২০২১ সালে শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সাহসী সাংবাদিকতা পদকের জন্যে নির্বাচিত হন দৈনিক প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সর্বক্ষেত্রে ৫০ ভাগ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র। নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দেশে জনসংখ্যার ৫০ ভাগ নারী হলেও কর্মক্ষেত্রে ৫০ ভাগ নারীর অংশগ্রহণ এখনো নিশ্চিত হয়নি। ফলে এখনো নারীদের বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হেনন্থার শিকার হতে হয়। সমাজে নারী বিদ্বেষী মনোভাব বেড়েছে। যুগে যুগে নারীরা তাদের মেধা মনন ও সসৃজনশীণতা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। নারীর কাজের মূল্যায় এখনো যথাযথভাবে হচ্ছে না। তাদের ঘরের কাচের আর্থিক মূল্য এখনো নিশ্চিত রয়। বক্তারা আরো বলেন, সমাজে নারীর মুক্তি না হলে এ সমাজ মুক্ত হবে না। এখনো নারীরা তাদের পছন্দ মতো পোশাক পড়তে পারেন না। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সর্বক্ষেত্রে ৫০ ভাগ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।প্রসঙ্গত, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন নিজ উদ্যোগে শিলালিপি নামর একটি পত্রিকা বের করতেন। এরপর তিনি সাপ্তাহিক বেগম, ললনা পত্রিকায় কাজ করেছেন। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে হত্যা করে। পরে তার মরদেহ রায়েরবাজার বন্ধভুমিতে জাত বাধা ও চোখবাধা গুলিবৃদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। গুণী মেধাবী এই সাংবাদিক ১৯৩১ সালের ৩১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন