করোনা ভাইরাসের থাবায় বিশ্ব আজ টালমাটাল। এতদিন পর এ বিষয়ে প্রথমবার মুখ খুলল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। শুক্রবার (৮ মে) ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণে উহান মার্কেটের ভূমিকা রয়েছে। তবে সেটি কী তা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।
করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর থেকেই বিশ্বজুড়ে খবরের শিরোনাম চীনের উহান মার্কেট। প্রথম থেকেই গবেষকরা দাবি করে আসছিলেন সেখানকার একটি প্রাণীবাজার থেকেই করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার খাদ্য নিরাপত্তা ও জুওনোটিক ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ড. পিটার বেন এমবারেক বলেন, সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রে উহান মার্কেটের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কী হয়েছিল, এটি ভাইরাসের উৎস ছিল বা বিস্তার ছড়াতে সাহায্য করেছে অথবা আশ্চর্যজনকভাবে সেখানে শুধুমাত্র কিছু সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তা এখনও আমরা পরিষ্কার জানি না। জেনেভায় এক ব্রিফিংয়ে করোনার উৎস নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, এটা এখনও স্পষ্ট বলা যাচ্ছে না যে, জীবজন্তুদের থেকেই ওই বাজারের ক্রেতা বা বিক্রেতাদের শরীরে ভাইরাস ছড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, চীন ল্যাবরেটরিতে নভেল করোনাভাইরাস তৈরি করেছে এবং তা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে উহান মার্কেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এ বিষয়ে এতদিন কিছু বলেনি ডব্লিউএইচও। বরং তাদের চীন-ঘেঁষা অবস্থানের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে সংস্থাটির ওপর ক্রমাগত চাপ বাড়ছিল।
ড. পিটার বেন এমবারেক বলেন, ২০১২ সালে সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়া মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) ভাইরাসের উৎস হিসেবে উটকে শনাক্ত করতে গবেষকদের এক বছর লেগে গিয়েছিল। সে হিসাবে নভেল করোনাভাইরাসের উৎস শনাক্তে এখনও খুব বেশি দেরি হয়নি।
বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ওয়ার্ল্ডো মিটারে সর্বশেষ আপডেটকৃত তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে ৪০ লাখ ১২ হাজার ৮৩৭ জনের শরীরে।
এছাড়া ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২ লাখ ৭৬ হাজার ২১৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৩ লাখ ৮৫ হাজার ১৪১ জন।
বর্তমানে ভাইরাসটির উপস্থিতি রয়েছে ২৩ লাখ ৫১ হাজার ৪৮০ জনের শরীরে। তাদের মধ্যে ২৩ লাখ ২ হাজার ৭৮১ জনের সংক্রমণ মৃদু এবং ৪৮ হাজার ৬৯৯ জনের অবস্থা গুরুতর।
সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে ১৩ লাখ ২১ হাজার ৭৮৫ জনের শরীরে। দেশটিতে এ প্রাদুর্ভাবে মারা গেছেন ৭৮ হাজার ৬১৫ জন।