• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২৩ অপরাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করলে ইসরায়েলকে শক্তিশালী জবাবের হুঁশিয়ার ইরানের গাজায় এক গণকবরেই মিলল ৩০০ লাশ ইসরায়েলের গভীরে হামলার দাবি হিজবুল্লাহর বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক দুর্নীতির একটা সীমা থাকে, এটা সাগরচুরি বেনজীরের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট প্রভাবমুক্ত থেকে দুদককে অনুসন্ধান করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠক কাতারের সঙ্গে পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই রেয়াত সুবিধা বাতিল, ঢাকা থেকে ১৫ রুটে যত বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া চলমান তাপপ্রবাহ আরো কতদিন থাকবে, যা জানা গেল রংধনুর রফিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক বেনজীরের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান, অগ্রগতির প্রতিবেদন চেয়েছেন হাইকোর্ট পদে থেকেই ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন : হাইকোর্ট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের তফসিল ঘোষণা

তাইওয়ানে চীনের ‘নতুন স্বাভাবিকতা’, ভয় বাড়ছে বিশ্ববাণিজ্যে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় বিশ্ববাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে—পর্যবেক্ষকদের তেমনই অভিমত। কারণ তাইওয়ান প্রণালি বিশ্বের বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল ও পণ্য পরিবহনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পথ। গত কিছুদিন ধরে অঞ্চলটির চারপাশে চীনা সামরিক মহড়ার ফলে পণ্য পরিবহনে বিপর্যয় দেখা গেছে।  সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ তথা প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের মধ্য দিয়ে তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনা চরমে ওঠে।এর ধারাবাহিকতায় বুধবার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, ‘আমরা চীনের বিষয়ে যা দেখছি তা হলো, তারা এক ধরনের নতুন স্বাভাবিকতা প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে। আর সেটা আমরা হতে দিতে পারি না। ’  বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই ‘নতুন স্বাভাবিকতা’ এখন আলোচনার কেন্দ্রে। এ কথার অর্থ হচ্ছে, তাইওয়ান প্রণালিজুড়ে চীনা সশস্ত্র বাহিনীর মহড়াকে নিয়মিত করার মাধ্যমে সেটিকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখানো। পেলোসির মতে, বেইজিং এখন এ রকম পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে।পণ্যবাহী জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা এবং পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তাইওয়ান প্রণালিতে সামরিক তত্পরতাকে চীন স্বাভাবিক তত্পরতা হিসেবে তুলে ধরলে তা জাহাজ চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে।

নতুন স্বাভাবিতার আশঙ্কাকে উসকে দিয়ে বুধবার বেইজিং তাইওয়ানকে নিজেদের সঙ্গে জুড়ে নেওয়ার প্রশ্নে নতুন একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। চীনা গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, তাইওয়ান প্রণালিজুড়ে বেইজিংয়ের মহড়া এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়াবে। ওই শ্বেতপত্রে স্বাধীনতাকামী ‘তাইওয়ানিজ ইনডিপেনডেন্স ফোর্সের’ উদ্দেশে কড়া সতর্কবাণী রয়েছে। ওই গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না বলে মন্তব্য করেছে বেইজিং।  এ বছর বিশ্বের অর্ধেক কনটেইনার জাহাজ এবং টনের হিসাবে সবচেয়ে বড় আকৃতির ৯০ শতাংশ জাহাজ তাইওয়ান প্রণালি অতিক্রম করেছে। এসব জাহাজ পূর্ব এশিয়া ও বিশ্ববাজারে পণ্য নিয়ে যাতায়াত করে।জাহাজ চলাচলের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে জাহাজগুলো এই পথে আবার চলতে শুরু করেছে। কিন্তু চীনের সামরিক তত্পতরা বরাবরের মতো ঝুঁকি হিসেবে রয়ে গেছে। এতে এই শিল্প আকস্মিক নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারে। জাহাজ নজরদারি সংস্থার প্রধান বিশ্লেষক পিটার স্যান্ডস জানান, তাইওয়ান প্রণালির বিকল্প পথ খুঁজতে গেলে উল্লেখযোগ্য হারে মূল্যবৃদ্ধির মাসুল দিতে হতে পারে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাইওয়ানের ভেতরে ও বাইরে নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য কঠিন হয়ে পড়লে রপ্তানিকারকরা দ্বিতীয় সেরা বিকল্প উপায় খুঁজতে চাইবে। ’ তিনি আরো বলেন, যদি তাইওয়ান প্রণালি অবাধ যাতায়াত সুবিধার বাইরে চলে যায়, তাহলে সব পথই পুনর্বিন্যস্ত হবে। যাতায়াতের সময় বাড়বে এবং ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছতে আরো বেশি সময় প্রয়োজন হবে।

তবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক এশীয় বাণিজ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ডেবোরাহ এলমস বলেন, নতুন পথ তৈরির জন্য শ্রম ও সময় ব্যয়ের কথা চিন্তা করে ‘স্বল্পমেয়াদি সমস্যার’ মুখে দাঁড়িয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো জাহাজ চলাচলের পথ পুনর্বিন্যস্ত করবে না। ওই কর্মকর্তা জানান, এ ক্ষেত্রে পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের গভীরতা, সুযোগ ও সময়সীমার ওপর অপেক্ষা করতে হবে।মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এলব্রিজ কলবি বলেন, ‘যদি তাইওয়ান প্রণালিতে চীন পূর্ণ কিংবা আংশিক অবরোধ দেয়, তাহলে তাইওয়ানে গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের সরবরাহ চালু করতে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এশিয়ার সমমনাদের সঙ্গে কাজ করা। এদিকে তাইওয়ান প্রণালিতে বাণিজ্য চালানো চীনের জন্যও অপরিহার্য। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই পথ বিঘ্নিত হলে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জাহাজ পরিচালনাকারী কম্পানি (সিওএসসিও) নিজেই ক্ষতির মুখে পড়বে। এ ছাড়া প্রণালির উল্টো পাশে চীনের সাংহাই, শেনঝেন, নিংবো ও গুয়াংজু অবস্থিত, যা বিশ্বের বৃহত্তম পাঁচটি বন্দরের অন্তর্ভুক্ত।অবশ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন অর্থনৈতিক স্বার্থের চেয়ে তার রাজনৈতিক স্বার্থকে গুরুত্ব দিলে এই ক্ষতি মেনে নিতেও পারে।চীনের সরকার সমর্থিত বিশ্লেষক সংস্থা সেন্টার ফর চায়না অ্যান্ড গ্লোবালাইজেশনের ঊর্ধ্বতন গবেষণা কর্মকর্তা অ্যান্ডি মক বলেন, ‘শি চিন পিংয়ের অধীনে চীনা সরকার স্বল্প বা মধ্যমেয়াদি অর্থনৈতিক স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের দিকে মনযোগী হওয়ার দৃষ্টান্ত রেখেছে। ’ উদাহরণ হিসেবে বেইজিংয়ের ‘শূন্য কভিড কৌশলের’ কথা উল্লেখ করেন তিনি।মক আরো বলেন, তিনি মনে করেন না যে বেইজিং শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে অবরোধ ঘোষণা করবে। কারণ এতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের একটি যুক্তি তৈরি হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.