ফরিদপুর প্রতিনিধি ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে যৌতুক চাওয়াকে কেন্দ্র করে বর ও কনে পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের হিয়াবলদি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় বরসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহতদের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার সকালে ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার ওসি হাবিল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এলাকা সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জুলাই হিয়াবলদি গ্রামের কুয়েতপ্রবাসী শামিল শেখের কলেজপড়ুয়া মেয়ে স্বর্ণা আক্তারের (১৯) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী লস্করদিয়া ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামের জব্বার শেখের ছেলে (এনজিও-কর্মী) শাহজাহান শেখের (৩৪) পারিবারিক সম্মতিতে বিবাহ সম্পন্ন হয়। পরে দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ের এক মাস পর গত শুক্রবার অনুষ্ঠানের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার পর খাওয়াদাওয়া শেষে দেনাপাওনা নিয়ে বাধে হট্টগোল। এ নিয়ে দুই পক্ষই বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে দুই পক্ষের সমঝোতায় ওই সময়ই বর-কনের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। পরে কনের বাড়ি থেকে বরকে দেওয়া স্বর্ণের আংটি ফেরত চাওয়া হলে বর পক্ষ রুপার একটি আংটি ফেরত দেয়। আর এ নিয়েই বাধে সংঘর্ষ। এ সময় বরকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে কনে পক্ষের লোকজন। এ ছাড়া দুই পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং দুই পক্ষকেই ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেয়।কনের মা শেলিনা বেগম বলেন, ‘বিবাহের পর যৌতুক হিসেবে ছেলে পক্ষ আমাদের কাছে চার লাখ টাকা দাবি করে। দিতে দেরি করলে তারা আমাদের বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে। এ ছাড়া আমার মেয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে। আমি তাদের বোঝাতে চেষ্টা করি এবং সময় চাই। সেই সঙ্গে দুই পরিবারের পরামর্শ অনুযায়ী শুক্রবার অনুষ্ঠানের দিন ঠিক করা হয়। অনুষ্ঠানে তাদের প্রায় ৫০ জন লোক বরযাত্রী হিসেবে আসে। খাওয়াদাওয়া শেষ করে তারা মেয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানায় ও তাদের পাওনার জন্য চাপ দেয়। আমরা একটু সময় চাইতেই তারা খারাপ আচরণ শুরু করে। আর এ নিয়েই বাধে বাগবিতণ্ডা। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।বর শাহজাহান শেখ বলেন, ‘আমার বউ একজন খারাপ চরিত্রের নারী। তার অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। আমি বিষয়টি জেনে যাওয়ায় ঝগড়া বাধে। তারা বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আমার সব জিনিসপত্র রেখে দিয়েছে। আমাকেসহ আমার সঙ্গে যাওয়া লোকদের পিটিয়েছে। ফুলসুতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। বিয়েবাড়িতে এমন ঘটনা লজ্জাজনক।নগরকান্দা থানার ওসি হাবিল হোসেন জানান, এক মাস আগে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়, শুক্রবার তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা চলছিল। খাওয়াদাওয়া শেষে দুই পক্ষের লোকজনের বাগবিতণ্ডায় সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে দুই পক্ষকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেয়। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।