ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী সহিংসতায় ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে এক শিশু মৃত্যুর ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি সাত কর্মদিবস পর গত ৮ আগস্ট রিপোর্ট দাখিল করেছে। তবে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করতে নারাজ কমিটির প্রধান।কী আছে এই রিপোর্টে? কমিটির প্রধান ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) রামকৃষ্ণ বর্মণের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ঘটনার সময় স্থানীয়ভাবে করা ভিডিও সংগ্রহ ও পর্যালোচনা এবং ৫৪ জনের সাক্ষীর বক্তব্য নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। রিপোর্টটি জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।কিন্তু সেই রিপোর্টে শিশু হত্যার রহস্য প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করলেন কমিটির প্রধান রামকৃষ্ণ বর্মণ।গত ২৭ জুলাই জেলার রানীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নে ভাংবাড়ি ফুটকি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় তিনটি মামলা দায়েরের পর আতঙ্ক বিরাজ করছে ভাংবাড়ী মহেশপুর গ্রামে।
নিহত শিশুর বাবা বাদশা জানান, তার শিশুসন্তানকে হত্যার তদন্ত রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশ করা হোক। ঘটনার পর থেকে তিনি ও শিশুটির মা মিনারা বেগম শোকে অসুস্থ হয়ে গিয়েছেন। এ পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা বলা যাচ্ছে না। এ ঘটনার পর থেকে জেলা প্রশাসন, স্থানীয় পুলিশ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সান্ত্বনা ও প্রায় ৯০ হাজার টাকা দিয়েছেন সবাই। সেই টাকা তার ও পরিবারের চিকিৎসাবাবদ খরচ হয়ে গেছে। তিনি আরো জানান, সন্তান হারানোর পরও তিনি কারো বিরুদ্ধে মামলা করেননি। কারণ, মামলা করে তিনি তার সন্তানকে ফিরে পাবেন না। কিন্তু পুলিশের করা মামলায় যেন তার স্বজন ও প্রতিবেশীদের গ্রেপ্তার করা না হয় সেই দাবি তার।স্থানীয়রা জানান, এলাকার নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষকে যেন হয়রানি না করা হয়, শান্তিতে থাকতে চান তারা।রানীশংকৈল থানার ওসি জাহিদ ইকবাল জানান, এ মামলায় কাউকে অহেতুক হয়রানি করা হবে না। তবে সরকারি কাজে বাধা ও শিশু নিহতের ঘটনাটি আরো তদন্ত করে দেখা হবে।এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।উল্লেখ্য, ২৭ জুলাই ভোটকেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পরাজিত মেম্বার পদপ্রার্থীর সমর্থকরা প্রিসাইডিং অফিসারসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ঘেরাও করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা এবং সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়লে মায়ের কোলে থাকা সুরাইয়া নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা সাড়ে সাত শ জনের বিরুদ্ধে আলাদা তিনটি মামলা করা হয়।