যশোরের অভয়নগরে ক্যান্সারে আক্রান্ত নিতাই চন্দ্র সাহা (৫৭) নামে এক ব্যক্তির মৃতদেহের সৎকার করেলেন এসিল্যাণ্ড, ওসি ও সাংবাদিকরা। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মহাশ্মশানে এ সৎকার করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন উপজেলার মহাকাল এলাকার নিতাই চন্দ্র সাহা। গত ৪ মে ভারতে চিকিৎসা শেষে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। ১৪ মে অসুস্থ হয়ে পড়লে নিতাই চন্দ্রকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের সন্দেহ হলে ১৫ মে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ১৭ মে রবিবার স্ত্রীর করোনা পজিটিভ ধরা পড়লেও নিতাই চন্দ্রের নমুনায় করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়। মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নওয়াপাড়া মহাশ্মশান কমিটির সভাপতি তাপশ কুণ্ডু বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এস এম মাহামুদুর রহমান রিজভীর মাধ্যমে জানতে পারেন হাসপাতালে একজন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সকাল থেকে পরিবারের কেউ মৃতদেহ নিতে আসেনি। এ খবর পাওয়ার পর দুপুরে আমি অ্যাম্বুলেন্সে করে মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে আসি। এরপর থেকে শ্মশানে মৃতদেহ সৎকার করার মানুষগুলো পালিয়ে যায়। বিষয়টি নওয়াপাড়া প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের উপজেলা প্রতিনিধি মাসুদ তাজকে জানানো হয়।
এ ব্যাপারে মাসুদ তাজ বলেন, নওয়াপাড়া মহাশ্মশান কমিটির সভাপতির মাধ্যমে মৃতদেহের বিষয়টি জানার পর প্রেস ক্লাবের সদস্য শিকদার আনিসুর রহমান ও ডিআর আনিসকে সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সাথে যোগাযোগ করি। ইফতারের পর মৃতদেহের সৎকার করা হবে বলে সকলে একমত হন। রাত আনুমানিক ৮ টার সময় সকলের প্রচেষ্টায় করোনা সন্দেহে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মৃত ব্যক্তির সৎকারের কাজ শুরু করা হয়।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, মৃত ব্যক্তির করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ। অথচ তাঁর সৎকার করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। পাওয়া যায়নি তাঁর পরিবারের কোন সদস্যকে। মানবতার কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ পুলিশ এগিয়ে এসেছে এবং ভালোভাবে সৎকার কাজে সহযোগিতা করেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেএম রফিকুল ইসলাম বলেন, মানুষের জন্য মানুষ এগিয়ে আসবে। একজন মানুষ মারা গেলেন, অথচ তাঁর সৎকার করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। বিষয়টি দুঃখজনক। তারপরও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুসেইন খাঁন স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক ধর্মীয় বিধি মেনে মৃতদেহের সৎকার করা হয়েছে। এ কাজে সহযোগিতা করার জন্য অভয়নগর থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্য, শ্মশান কমিটির সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ মিলন মণ্ডল ও সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান তিনি।