করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই চট্টগ্রামে নানা ভাবে মানুষের পাশে রয়েছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু এই দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে অসহায়দের পাশে থাকাতো দূরের কথা দলীয় নেতাকর্মীদেরও কোনো প্রকার সহযোগিতা করেনি চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টি। এ নিয়ে দলটির জেলা ও মহানগরীর নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে জাতীয় পার্টির একাধিক নেতাকর্মী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে চট্টগ্রামের মানুষ সব চেয়ে বেশি অসহায় জীবন অতিবাহিত করছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। এ সমস্যার মধ্যেও চট্টগ্রাম বা ঢাকা থেকে পার্টির কোনো নেতাই আমাদের খবর নেয়নি। যেখানে দল নেতাকর্মীদের পাশে থাকতে পারে না, সেখানে সাধারণ মানুষের পাশে কিভাবে থাকবে? নেতারা নিজেদের শোডাউন নিয়ে ব্যস্ত। নির্বাচন এলে, পদ-পদবী নেয়ার সময় হলে নেতাকর্মীদের মনে পড়ে।
চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা বলেন, দেশের এ পরিস্থিতিতে যদি মানুষের পাশে দল থাকতে না পারে তাহলে আর কখন পারবে। এসময়ে চট্টগ্রাম জাপা উধাও হয়ে গেছে। পদবীর লালসা নিয়ে নেতারা ব্যস্ত। নগর জাপার সভাপতি সোলায়মান শেঠ চট্টগ্রাম ছেড়ে খাগড়াছড়িতে গিয়ে বসে আছেন। তিনি (সোলায়মান শেঠ) নগরের সভাপতি হয়েও কর্মীদের পাশে নেই। নেতাকর্মীরা করোনার কারণে ব্যক্তিগতভাবে নানা সমস্যায় রয়েছেন। আরো অনেক নেতা আছেন তারাও কর্মীদের পাশে নেই। গরীব-অসহায় মানুষতো দূরে থাক, কর্মীদের পাশেও নেই।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নিবার্চনেও দলের প্রার্থী হয়েছিলেন সোলাইমান শেঠ। তখনও দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শোডাউন, মিছিল মিটিং, পথ সভা করেছেন তিনি। পরে নিজেই প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু করোনা ইস্যুতে দলের নেই কোনো সাংগঠনিক কর্মসূচি এবং তৎপরতা। এতো বড় বিপদের সময় রাজনৈতিক নেতারা পাশে না থাকায় তৃণমূলের অধিকাংশ নেতাকর্মীরাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
সূত্র জানায়, করোনা ইস্যুতে রাজনীতির মাঠে নেই নগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ, এয়াকুব আলী, জেলা শফিক আহমেদসহ উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি-সম্পাদকসহ চট্টগ্রামের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। শুধুই নির্বাচন আসলে এবং দলীয় পদ-পদবী প্রয়োজন হলে তখনই শোডাউন দিতে দেখা যায় এসব নেতাদের। কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্যই এটি একটি কৌশল। চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক কমিটির শত শত নেতাকর্মী রয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই গরিব-মধ্যবিত্ত পরিবারের নেতাকর্মী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের এক অধ্যাপক বলেন, দল যদি একজনের হাতে জিম্মি থাকে তাহলে সেখানে দলীয় নেতাকর্মীদের কোন প্রাধান্য থাকে না। আর যদি টাকা দিয়ে দল চালানো হয় সেখানে নেতাকর্মীদের জন্য ভালোবাসা থাকে না। নিজের স্বার্থের চেয়ে দলীয় স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। সেখানে চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির কর্মীরা গণতন্ত্র নয়, একনায়কতন্ত্রের কাছে জিম্মি।
চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, কমিটি গঠনের পর থেকে সাধ্যমতো চেষ্টা করছি দলীয় কর্মীদের পাশে থাকতে। খাগড়াছড়িতে বিভিন্ন প্রয়োজনে যেতে হয়। আর করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায়ও নেই। এরপরও বেশ কয়েকটি এলাকায় আমরা ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছি
সুত্রঃডেইলি বাংলাদেশ