• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৩ অপরাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ যশোরের বায়েজীদ হাসান হত্যা মামলার ২ জন পলাতক আসামীকে ঢাকা ভাটারা থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬, যশোর ও র‌্যাব-১ গোপালগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি সবুজ’কে পটুয়াখালী হতে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৬ Mostbet App Download For Android Apk And Ios 2023 Mostbet 314 Casino Azərbaycanda Bukmeker Kontoru Mostbet Azerbaycan Yukle Android Os Apk Və Ios App-d Mostbet Az-90 Kazino Azerbaycan ən Yüksək Bukmeyker Rəsmi Sa 0898520760 ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করলে ইসরায়েলকে শক্তিশালী জবাবের হুঁশিয়ার ইরানের গাজায় এক গণকবরেই মিলল ৩০০ লাশ ইসরায়েলের গভীরে হামলার দাবি হিজবুল্লাহর বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক দুর্নীতির একটা সীমা থাকে, এটা সাগরচুরি বেনজীরের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট প্রভাবমুক্ত থেকে দুদককে অনুসন্ধান করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠক কাতারের সঙ্গে পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই

আইনি জটিলতা এড়াতে কিডনি প্রতিস্থাপনে বিদেশমুখী রোগী

বিশেষ প্রতিনিধি দেশে প্রতিবছর ৪০ হাজার মানুষের কিডনি বিকল হয়ে পড়ছে। এর মধ্যে ১০ হাজার রোগীর কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়। তবে দেশে বছরে গড়ে মাত্র ২৫০ জনের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। আইনি জটিলতা এড়াতে বছরে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ মানুষ বিদেশ গিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপন করছেন। বিদ্যমান আইন সংশোধন হলে দেশে এসব কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।১৯৯৯ সালে বাংলাদেশে মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন হয়। ২০১৮ সালে এই আইন কিছুটা সংশোধন করা হয়। সংশোধনী অনুযায়ী, ২৩ জন নিকটাত্মীয়ের বাইরে কেউ কোনো রোগীকে কিডনি দান করতে পারেন না। তবে ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মীয় না হলেও কিডনি দানের সুযোগ রয়েছে। তবে দেশে আইনের সীমাবদ্ধতায় আত্মীয়তার সম্পর্ক না থাকলে কেউ চাইলেও কিডনি দান করতে পারেন না। ফলে দাতা সংকটের কারণে প্রয়োজনের তুলনায় দেশে খুব কম কিডনি প্রতিস্থাপন হয়।

এ জটিলতা নিরসনে দাতা সংকট দূর করতে ২০১৯ সালে হাইকোর্টে রিট হয়। আদালত রায় দেন, নিকটাত্মীয়ের বাইরেও বা মানবিক ও সহানুভূতিশীল যে কেউ চাইলে কিডনি দান করতে পারবেন। ছয় মাসের মধ্যে আইন সংশোধনের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে। তবে সাড়ে চার বছরেও আইন সংশোধন করে বিধিমালা হয়নি। ফলে কিডনি প্রতিস্থাপনে জটিলতা রয়েই গেছে।ওই আইন সংশোধনের পক্ষে রিটকারী আইনজীবী ছিলেন রাশনা ইমাম। তিনি বলেন, এত বছরেও আইন সংশোধনের খসড়াই তৈরি করতে পারেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আদালত অবমাননা মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।কিডনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রোগে চিকিৎসার প্রসার বাড়াতে ডায়ালাইসিস শয্যা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতিস্থাপনে আইনি জটিলতা নিরসন করতে হবে। তবে আত্মীয় ছাড়া কিডনি দান বৈধতা পেলে নিম্ন আয়ের মানুষ এ অঙ্গটি বিক্রিতে আগ্রহী হতে পারে। এটাও শক্ত হাতে রোধ করা প্রয়োজন।এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব কিডনি দিবস। প্রতিবছর মার্চের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার দিবসটি পালিত হয়। চলতি বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে– ‘সুস্থ কিডনি সবার জন্য, বৃদ্ধি পাচ্ছে ন্যায়সংগত সেবার সমান সুযোগ আর নিরাপদ ও সর্বোত্তম ওষুধের অনুশীলন’ দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে ৮৫ কোটির বেশি মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। দুঃখজনক হলেও সত্য, এর মধ্যে ৭৫ কোটি রোগী জানে না প্রাণঘাতী কিডনি রোগ নীরবে তাদের দেহের গুরুত্বপূর্ণ এ অঙ্গ নষ্ট করে চলেছে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ২০৪০ সালের মধ্যে ৫০ লাখের বেশি কিডনি বিকল রোগী সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করবে। প্রতিবছর ১ কোটি ৩০ লাখ লোক আকস্মিক কিডনি বিকল রোগে আক্রান্ত হয়, যার ৮৫ ভাগই আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে।দেশে কিডনি প্রতিস্থাপনের গতি বাড়াতে স্বেচ্ছায় বা মরণোত্তর অঙ্গদানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ব্রেইন ডেড ব্যক্তি থেকে কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু হয়েছে। স্বেচ্ছায় বা মরণোত্তর অঙ্গদানে একটা সেন্টার খোলা হয়েছে। এখানে কেন্দ্রীয়ভাবে ডেটাবেজ তৈরি হচ্ছে। এ পর্যন্ত মোট ১০ জন অঙ্গদানে অঙ্গীকার করেছেন। তবে এখনও জাতীয়ভাবে অঙ্গদানে কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ তৈরি হয়নি।

বিএসএমএমইউর ইউরোলজি রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, আইনি জটিলতার কারণে রোগীরা দাতা না পেয়ে বিদেশে গিয়ে ১০-২০ লাখ টাকা খরচ করে প্রতিস্থাপন করছে। প্রতিস্থাপনের পর পরবর্তী ফলোআপেও লাখ লাখ টাকা খরচ হয়। অনেক রোগী ও দাতা ফলোআপ করে না বলে জটিলতা বাড়ে।ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজির পরিচালক অধ্যাপক ডা. বাবরুল আলম বলেন, দেশে ১৯৮২ সালে প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু হয়। এ পর্যন্ত ৩০৬৫ রোগীর প্রতিস্থাপন দেশে হয়েছে। তিনি বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য বাংলাদেশিরা ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।কিডনিদাতাদেরও বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। দেশে প্রতিস্থাপনে ১০০ ভাগ সক্ষমতা থাকার পরও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে দেশ। এ সংকট নিরসনে মরণোত্তর দানের কিডনি প্রতিস্থাপনে মনোযোগ বেশি দিতে হবে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মরণোত্তর দানে দুটি কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে। উন্নত দেশগুলোয় ৮০-৯০ শতাংশ কিডনি প্রতিস্থাপন হয় মরণোত্তর দানে।

কিডনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন উর রসিদ বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপনের হার ৩০ শতাংশ হয় জীবিত নিকটাত্মীয় থেকে এবং ৭০ শতাংশ হয় ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্টের (মরণোত্তর দেহদান) মাধ্যমে। বিশ্বের বিভিন্ন ইসলামী দেশগুলোতে বিশেষ করে সৌদি আরব, ইরান ও কুয়েতেও ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট করা হচ্ছে। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয় ফ্রান্সে। এর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে। ভারতে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট ৮২ শতাংশের কাছাকাছি। এশিয়ার দেশগুলোতে এই হার ১০ শতাংশের নিচে। এ রোগের জটিলতা ও চিকিৎসা ব্যয়ের আধিক্য বিবেচনায় প্রতিরোধকেই একমাত্র অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপনে বিদেশগামিতা কমাতে আইনি জটিলতা নিরসন জরুরি। তবে আমি এ মন্ত্রণালয় নতুন এসেছি, এখনও সবকিছু বুঝে উঠতে পারিনি। এ বিষয়ে আদালতের রায় থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.