বিশেষ প্রতিনিধি গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের লাভের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত।গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন অভিযোগপত্র গ্রহণ করে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য মামলাটি ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে পাঠান। আগামী ২ মে পরবর্তী দিন রাখা হয়েছে। আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন বিশেষ পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল, মীর আহমেদ আলী সালাম, মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
এ দিন দুপুরে আদালতে হাজির হন ড. ইউনূস। গত ৩ মার্চ তিনি এ মামলায় জামিন পান। শুনানি শেষে বেরিয়ে ড. ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, আইনের শাসন বলে যে একটা জিনিস, সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এখন পবিত্র রমজান মাস। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন, বালা-মুসিবত থেকে যেন আমরা বাঁচি। মানুষ যেভাবে বাঁচতে চায় সেভাবে পারছে না। আমাদের ওপর অনেক বালা-মুসিবত। আমার ওপর ব্যক্তিগত বালা-মুসিবত, সহকর্মীদের ওপর এবং দেশের ওপরও। এটা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। মানুষের রেহাই পাওয়ার রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে। তা ছাড়া সামনে ঈদ আসছে, খুশির দিন। আমরা যেন সত্যি সত্যি খুশির ঈদ উদযাপন করতে পারি। এর সঙ্গে পহেলা বৈশাখ। আরও খুশি, সবকিছু একসঙ্গে হবে।
এ মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন– গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, পরিচালক আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নুরজাহান বেগম, এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, আইনজীবী ইউসুফ আলী, জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, প্রতিনিধি মাইনুল ইসলাম এবং গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান।আদালতে ড. ইউনূসসহ অন্য সবাই হাজির হলেও অসুস্থতার কারণে হাজির না হওয়ায় মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক। এ প্রসঙ্গে আদালত বলেন, অ্যাম্বুলেন্সে করে হাজির হতে পারলে বিচারিক আদালত থেকে শাহজাহান জামিন নিতে পারবেন।গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ৩০ মে এই মামলা করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিরা ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।