বিশেষ প্রতিনিধি ঈদ ও বাংলা নববর্ষের পাঁচ দিনের ছুটি শেষে খুলতেই বড় দর পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। গতকাল সোমবার প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৮৫ শতাংশ শেয়ারের দর কমেছে। বিপরীতে মাত্র ৮ শতাংশেরও কম শেয়ারের দর বেড়েছে। এতে সূচকেরও বড় পতন হয়েছে। লেনদেনও নেমেছে চারশ কোটি টাকার নিচে।
বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের এমডিরা জানান, মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সৃষ্ট অস্থিরতার প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে, বিশেষত জ্বালানি তেলের বাজারে পড়তে পারে– এমন শঙ্কায় দর পতন হয়েছে বলে নানা জন বলাবলি করছে। ইসরায়েলে ইরানের হামলার পর গতকাল তেল আবিব স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক ৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ কমেছে। অথচ বাংলাদেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৮৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমে ৫৭৭৮ পয়েন্টে নেমেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দুটি দেশের মধ্যে সৃষ্ট সামরিক উত্তেজনা নতুন করে বাড়ছে না– এমন আশ্বাস মিলেছে উভয় দেশের দিক থেকে। যুক্তরাষ্ট্রও মিত্র ইসরায়েলকে ইরানে পাল্টা হামলা না করতে সতর্ক করে আসছে। এমন খবরে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার অধিকাংশ দেশের শেয়ারবাজারে ইতিবাচক ধারা দেখা গেছে।
জানতে চাইলে শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ বলেন, যারা বলেন ইসরায়েলে ইরানের হামলার খবরে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে দর পতন হয়েছে, তারা একটা উছিলা দাঁড় করিয়ে দর পতনের সান্ত্বনা খুঁজছেন। এর বেশি কিছু নয়। বাস্তব কারণ হলো দেশে ব্যাংক সুদহার বাড়ছে। সামষ্টিক অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো ভালো ব্যবসা করেছে– এমন খবর মিলছে না। বরং ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে। এর প্রভাবে শেয়ারের দর কমবে, এটাই স্বাভাবিক।আবু আহমেদ বলেন, গণমাধ্যমের খবরেই এসেছে কয়েক মাস ধরে হাজার হাজার বিও অ্যাকাউন্ট খালি হয়েছে। অর্থাৎ এসব অ্যাকাউন্টধারী শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নিয়েছেন। এর বিপরীতে নতুন বিনিয়োগ আসছে বলে মনে হচ্ছে না।পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল ব্যাংক খাতের শেয়ারের গড়ে প্রায় ১ শতাংশ হারে দর পতন হয়েছে। পৌনে ৩ শতাংশ হারে দর পতন হয়েছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ারের। বীমা খাতে ২ শতাংশ দর পতন হয়েছে। এ ছাড়া বস্ত্র খাতে সোয়া ২ শতাংশ, প্রকৌশল খাতের পৌনে ২ শতাংশ, সিমেন্ট খাতে আড়াই শতাংশ এবং সিরামিক খাতের ৪ শতাংশের বেশি দর পতন হয়েছে।
এমন দর পতনে ডিএসইএক্স সূচক ৮৫ পয়েন্ট হারিয়ে ৫৭৭৮ পয়েন্টে নেমেছে। গতকাল এ বাজারে ৩৬৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা গত ৪ জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন।