বিনোদন ডেস্ক সরকারি অনুদানের ছবি নিয়ে নানা সময় নানান কথা হয়। অনুদানে নির্মিত সিনেমাগুলো নিয়ে আলোচনার চেয়ে সমালোচনাই বেশি দেখা যায়। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারি টাকার কারণে এই ছবিগুলোকে যেনোতেনোভাবে নির্মাণ করে মুক্তি দেওয়া হয়। এজন্য মানুষ হলে গিয়ে ছবি দেখতে চান না। ফলে হল মালিকেরাও সরকারি অনুদানের ছবিগুলো হলে দিতে চান না। এবার সরকারি অনুদান বন্ধ করে দেওয়ার কথা বললেন মুভিলর্ড খ্যাত খল অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। নির্বাচনের পর রোববার (২১ এপ্রিল) বিকেলে শিল্পী সমিতিতে আসেন মিশা-ডিপজলসহ তার প্যানেলের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। এসময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
ডিপজল বলেন, ‘একটি সিনেমার জন্য সরকার অনুদান দিচ্ছে ৪০-৬০ লাখ। একটি ছবি বানাতে খরচ হয় ৮০-৯০ লাখের বেশি। একটা ভালো ছবি নির্মাণ করতে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা লেগে যায়। অনুদানের ৫০ লাখ টাকা দিয়ে কি ছবি বানাব? যিনি অনুদান আনেন তিনি অর্ধেক খেয়ে ফেললে বাকি থাকে ২০ লাখ। এই টাকা দিয়ে যেটা নির্মাণ হয় তা হয়ে যায় নাটক।’
ডিপজলের কথায়, ‘অনুদানের টাকায় ভালো ছবি হয়না সেটা বলবো না। হয়তো দুই একটা ভালো সিনেমা হচ্ছে। কিন্তু বাকি সব শূন্য। আমি মনে করি, সরকারি অনুদান বন্ধ করে দেওয়া ভালো। কারণ, এটার কারণে সরকারি টাকা নষ্ট হচ্ছে। টাকাটা ভালো কাজে লাগছে না।’
দুইজন সিনেমা দেখতে গেলে এখন হাজার টাকা নিয়ে হলে যেতে হয়। এটা অনেকের জন্য জুলুম বলে মনে করেন ডিপজল। তার কথায়, ‘একটা টিকিটের মূল্য ৫০০ টাকা। একজন রিকশা ওয়ালা কি এতো টাকা দিয়ে সিনেমা দেখতে পারবে? আমাদের দর্শকের দিকেও তাকাতে হবে। এতে করে সবাই পরিবার নিয়ে হলে যেতে হিমশিম খাচ্ছে।এরপরই অনুদানের সিনেমা নিয়ে কথা বলেন মিশা সওদাগর। তার কথায়, ‘সরকার আগের থেকে অনুদানের টাকা কিছুটা বাড়িয়েছে। কিন্তু এই টাকা একটি ভালো সিনেমা বানানোর জন্য যথেষ্ট নয়। আমি দায়িত্বশীলদের বলব, আপনারা ৭৫ শতাংশ অনুদান বাণিজ্যিক ছবিতে দেন। কারণ, হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সিনেমা হল বন্ধ হওয়া যাবে না। কারণ, সিনেমা হল বাঁচিয়ে রাখে বাণিজ্যিক সিনেমা। সাধারণ মানুষের জন্য ছবি বানানো দরকার। আতেল মার্কা ছবি বানানো সোজা কিন্তু হুররে আর সিশ বাজানো ছবি বানানো খুবই কঠিন। আমার দাবি থাকবে ৭৫ শতাংশ বাণিজ্যিক ছবিতে দেওয়া হয়। এবং সেখান থেকে লাভের ৫০ ভাগ যেন সরকারকে ফেরত দেওয়া হয়। তাহলে সরকারও টাকা দিতে উৎসাহিত হবে।’
আগে শিল্পী সমিতির সদস্যদের সপ্তাহে দু’দিন ফ্রি চিকিৎসা প্রদানের ঘোষণা দেন মিশা-ডিপজল। মিশা বলেন, ‘আমাদের প্রথম কাজ শিল্পীদের ফ্রি চিকিৎসা সেবা দেয়া। ২৩ (২৩ এপ্রিল) তারিখের পর সপ্তাহে দু’দিন ডাক্তার আসবেন সমিতিতে। আমরা শিল্পীদের ফ্রি চিকিৎসার পাশাপাশি ফ্রি ঔষধও দেব। এটাই আমাদের প্রথম কাজ। এর পরে পর্যায়ক্রমে বাকি কাজগুলো করব ইনশাআল্লাহ।’গত শুক্রবার এফডিসির শিল্পী সমিতির নির্বাচন হয়। এ নির্বাচনে শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মনোয়ার হোসেন ডিপজল।