সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে গৃহবধূর ধর্ষকদের বাড়িতেও চলছে পুলিশের অভিযান। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তদের গ্রামের বাড়িতে নজরদারি রেখেছে পুলিশ। তবে এ পর্যন্ত অভিযুক্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
শুক্রবার রাতে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে গা ঢাকা দেয় অভিযুক্তরা।
জানা গেছে, গণধর্ষণের ঘটনায় শনিবার দুপুরে অভিযুক্ত রবিউল হাসানের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ইউপির বড়নগদীপুর গ্রাম অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে এসময় তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তার বাড়ি সেখানে হলেও সে মূলত সিলেট নগরীতে থাকে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত আরেক ধর্ষক অর্জুন লস্করের গ্রামের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার মরিচা গ্রামেও নজরদারি রেখেছে পুলিশ। সে ওই গ্রামের অমলেন্দু কুমার লস্কর অনুর ছেলে। গণধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি তার এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে দিরাই থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, ধর্ষক রবিউলের ন্যাক্কারজনক বিষয়টি আমলে নিয়ে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। সে যদি গ্রামের বাড়িতে এসে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে।
জকিগঞ্জ থানার ওসি মীর আব্দুন নাসের জানান, এ ঘটনার পর থেকে আমাদের কাছে তথ্য এসেছে। সে মোতাবেক তার গ্রামের বাড়িতে আমাদের নজরদারি রয়েছে। এলাকায় কোনো অবস্থাতে সে আত্মগোপনে থাকতে পারবে না।
এ ব্যাপারে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. লুৎফুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
এর আগে শুক্রবার রাতে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। তার বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমায়।
এদিকে গণধর্ষণের ঘটনায় এমসি কলেজের গণিত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে প্রধান করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জীবন কৃষ্ণ আচার্য্য এবং সহযোগী অধ্যাপক জামাল উদ্দিনকে নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
তদন্ত কমিটিকে সাতদিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে দুই নিরাপত্তাকর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকৃতরা হলেন রাসেল মিয়া ও সবুজ আহমদ। শনিবার জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সালেহ আহমদ।
তিনি জানান, গণধর্ষণের ঘটনায় নিরাপত্তাকর্মীদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে দুইজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া মাহফুজুর রহমান অভিযুক্ত হওয়ায় ছাত্রাবাসে তার আসন করা বাতিল করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকেও স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে।