সারা পৃথিবীর ঘুম কেড়ে নিয়েছে করোনা ভাইরাস। নতুন এই ভাইরাস নিয়ে গবেষণা চলছে জোরেশোরে। কিন্তু এর প্রতিষেধক পাওয়ার ক্ষেত্রে এখনো কূলকিনারা হয়নি। গবেষকদের দাবি, বৈশিষ্ট্য বদলে দিনে দিনে আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে ভাইরাসটি।
এরমধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্তদের নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন আইসল্যান্ডের গবেষকরা। সংক্রামক এই রোগের উৎস সম্পর্কে জানতে গিয়ে তারা পেয়েছেন নতুন তথ্য।
ইউরোপের ছোট্ট এই দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ৩ লাখ ৬৪ হাজার। এজন্য কোনো লকডাউন বা কারফিউ চাপিয়ে না দিয়ে দেশের সব জনগণের করোনা টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশটির সরকার। আর সেই কাজটি করতে গিয়েই উঠে এসেছে এই তথ্য।
সৌদি আরব ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে আল আরাবিয়া অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, রোববার রাত থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ এবং বায়োটেকনোলজি ফার্ম ডিকোড জেনেটিক্স ১০ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষকে পরীক্ষা করেছেন। এটাই জনসংখ্যার মাথাপিছু হিসাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় করোনা পরীক্ষা বলে দাবি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
তবে আইসল্যান্ডের পরীক্ষা অন্যান্য দেশের মতো নয়। অন্য দেশগুলোতে সাধারণত, করোনার লক্ষণ দেখা দিলে অথবা কোন করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসলে তাকে পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু আইসল্যান্ড একমাত্র দেশ যারা করোনার কোন লক্ষণ না থাকলেও দেশের সব নাগরিককে পরীক্ষা করছে। এমনকি যারা কখনো করোনায় আক্রান্তের সংস্পর্শেরও আসেননি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত আইসল্যান্ডে ২১৮ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হল, শনাক্ত হওয়াদের তাদের অর্ধেকের মাঝে করোনা ভাইরাসজনিত কোনো লক্ষণ ছিল না।
অস্টিনের টেক্সাস ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানতে পেরেছেন যে, ১০ শতাংশেরও বেশি রোগী ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত এমন ব্যক্তির দ্বারা সংক্রামিত হয়েছেন তবে এখনও তাদের মাঝে কোন লক্ষণ প্রকাশ পায়নি।
এই ঘটনা এটাই প্রমাণ করেছে যে, ভাইরাসজনিত লক্ষণ নেই এমন লোকদের মধ্যেও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস।
আইসল্যান্ডের চিফ এপিডেমিওলজিস্ট থোরলফার গনসন বাজফিড নিউজকে বলেছেন, ডিকোড জেনেটিক্সের প্রাথমিক ফলাফলগুলি ইঙ্গিত দেয় যে, সাধারণ জনসংখ্যার কম সংখ্যক ভাইরাস সংক্রামিত হয়েছে এবং যারা পজিটিভ হয়েছেন তাদের প্রায় অর্ধেকই লক্ষণহীন। বাকি অর্ধেক মানুষের মাঝে মাঝারি শীত-জাতীয় লক্ষণ দেখা যায়।