• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৬:১৯ অপরাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ Where To Find Iranian Wives অভয়নগরে বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি অভয়নগরে ছাত্র ছাত্রী প্রদর্শনী ক্লাস সবক ও পাগড়ি প্রদান Plinko 2024: Guía para juegos Plinko gratuitos Vietnamese Vs. Thai Mail Order Brides: A Comparative Analysis যশোরের বায়েজীদ হাসান হত্যা মামলার ২ জন পলাতক আসামীকে ঢাকা ভাটারা থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬, যশোর ও র‌্যাব-১ গোপালগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি সবুজ’কে পটুয়াখালী হতে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৬ Mostbet App Download For Android Apk And Ios 2023 Mostbet 314 Casino Azərbaycanda Bukmeker Kontoru Mostbet Azerbaycan Yukle Android Os Apk Və Ios App-d Mostbet Az-90 Kazino Azerbaycan ən Yüksək Bukmeyker Rəsmi Sa 0898520760 ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করলে ইসরায়েলকে শক্তিশালী জবাবের হুঁশিয়ার ইরানের গাজায় এক গণকবরেই মিলল ৩০০ লাশ ইসরায়েলের গভীরে হামলার দাবি হিজবুল্লাহর বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক

বিশ্ব মরুময়তা ও অনাবৃষ্টি প্রতিরোধ দিবস আজ

১৭ জুন, আজ বিশ্ব মরুময়তা ও অনাবৃষ্টি প্রতিরোধ দিবস। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে পৃথিবীর। এ পরিবর্তনের দ্বারায় কখনো ঘূর্ণিঝড়, কখনো ভূমিকম্প, কখনো অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি, কখনো বন্যা, কখনো বিভিন্ন রোগ-বালাই দুর্যোগ আকারে দেখা দিচ্ছে। মারা যাচ্ছে মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাঠের পর মাঠ ফসল। বাড়ছে খাদ্য সংকট। ঘরবাড়ি মিশে যাচ্ছে মাটির সঙ্গে। ফলে মানুষ হারাচ্ছে তার মাথা গোঁজার ঠাঁই। নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে জলবায়ুর কু-প্রভাব বিশ্বে মরুকরণের একটি অন্যতম সমস্যা।

১৯৭৫ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের পক্ষ থেকে খরা ও মরুকরণের প্রতি সোচ্চার হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। এ ধারাবাহিকতায় ১৯৭৭ সালে নাইরোবিতে বিশ্ব মরুকরণবিরোধী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯২ সালে রিও ডি জেনিরোয় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের পরিবেশ ও উন্নয়নবিষয়ক সম্মেলনের পরপরই মরুকরণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশন গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

রিও সম্মেলনের এজেন্ডা ২১-এর প্রস্তাবটি ১৯৯২ সালে জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের ৪৭তম অধিবেশনে গৃহীত হয় এবং ইন্টার গভর্নমেন্টাল নেগোশিয়েটিং কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটি মরুকরণ সংক্রান্ত খসড়া কনভেনশন চূড়ান্ত করে। ১৯৯৪ সালের জুন মাসে কনভেনশনের দলিল চূড়ান্ত হয়। এ কনভেনশনে ৫০টি দেশ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর ১৯৯৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয় দলিলটি। বলা আবশ্যক, বাংলাদেশও এ কনভেনশন অনুমোদন করে। পরবর্তী সময়ে খরা ও মরুকরণ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করে তুলতে ১৭ জুন পালন করা হয় বিশ্ব খরা ও মরুকরণ প্রতিরোধ দিবস।

বিশ্বের জলাভূমির ৭০ শতাংশ এরই মধ্যে হয়ে পড়েছে মরুকবলিত। এর পরিমাণ পৃথিবীর মোট ভূমির চার ভাগের এক ভাগ। নিষ্কাশনে অব্যবস্থা ও লবণাক্ততার ফলে সেচের আওতাধীন আবাদি জমির বিশাল অংশ আজ অবক্ষয়ের সম্মুখীন। সুতারাং মরুকরণ ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য এক বিশাল হুমকি। এ জন্য প্রয়োজন মরুকরণ বিস্তার রোধ। আজকের দুনিয়ার পরিবেশের বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে মরুকরণ অন্যতম। জাতিসংঘ বলেছে, পৃথিবীর প্রায় দেড়শ’ কোটি মানুষ বেঁচে থাকার জন্য ক্ষয়িষ্ণু ভূমির ওপর নির্ভরশীল। আর পৃথিবীর অতি দরিদ্রদের ৪২ ভাগই বাস করে ক্ষয়ে যাওয়া এলাকায়, যারা মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বাস করছে। এ ভূমিক্ষয় জলবায়ু পরিবর্তনকে আরো ত্বরান্বিত করেছে, যা শুধু আমাদের বেঁচে থাকার জন্যই বিপদের কারণ নয় বরং এটি আমাদের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকিস্বরূপ।

মরুকরণ যেভাবে বিশ্বব্যাপী মাথাব্যথার কারণ, তেমনি আমাদেরও উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে দিন দিন আমাদের ফসলি জমি কমে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। একই সঙ্গে কমছে গাছপালা, বন-জঙ্গল। শুকিয়ে যাচ্ছে নদীগুলো। অন্যান্য জলাধারের অবস্থাও সঙ্গিন। দিন দিন যেমন আমাদের ফসলি জমি কমছে, একই সঙ্গে খরায় উর্বরতা হারাচ্ছে জমি। সাম্প্রতিক সময়ে এক গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ তিনটি দেশের একটি বাংলাদেশ। এ অবস্থায় পরিবেশের প্রতি আমাদের মনোযোগী হওয়া আবশ্যক।

জাতিসংঘের এক গবেষণা বলছে, ২০ বছর পর মানবজাতির যাবতীয় চাহিদা সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। সে সময়ে বর্তমানের প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি খাদ্যের প্রয়োজন হবে। জাতিসংঘ আশঙ্কা করছে, তখনকার চাহিদা মতো প্রয়োজনীয় খাদ্য ও অন্যান্য উপাদানের ঘাটতি দেখা দিয়ে সেটি সংকট সৃষ্টি করতে পারে। সেই সংকট গতি নিয়ে চলে যেতে পারে সংঘর্ষের দিকে। আর এ সংকটের একমাত্র কারণ হবে মরুকরণ ও খরা। মরুকরণ এতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না হলেও এখন এটি পরিবেশ বিজ্ঞানীদের যথেষ্ট ভাবিয়ে তুলেছে। সম্প্রতি আমাদের দেশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আম্পান, ফণী, সিডর, আইলা, নার্গিস ও ইয়াসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এ ভাবনাকে আরো প্রবল করে তুলেছে।

বাংলাদেশের সামগ্রিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, আমাদের দেশও মরুকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা বলেন, মরুকরণের প্রধান দুটি বিষয় হচ্ছে- একটি বিস্তৃত এলাকা ছেড়ে যদি সেখানকার মাটি অনুর্বর হতে থাকে এবং যদি নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে যেতে থাকে ও বৃষ্টির অভাব ঘটে। বিগত কয়েক দশক ধরে এ লক্ষণগুলো বেশি দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে কৃষিজমি সংরক্ষণ, কৃষিকাজে জৈব সার ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহিতকরণে দেশব্যাপী প্রচুর প্রচারণা, অপরিকল্পিত নগরায়ণ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা, নদীর পানিপ্রবাহে যথাযথ উদ্যোগ, খাল-বিল ও জলাভূমিগুলো সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন তারা।

অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে দেশের কৃষিজমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। সাধারণ হিসেবে মাটির জৈব পদার্থের পরিমাণ যদি পাঁচ ভাগ থাকে, তাহলে তা উর্বর মাটি। দেশের কৃষিজমিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বর্তমানে এক শতাংশ। রাসায়নিক সার ব্যবহার ও শাকসবজির বদলে ধান চাষ বেশি হওয়ায় মাটি গুণাগুণ হারিয়ে অনুর্বর হয়ে পড়ছে। বর্ষা বা শীত মৌসুমে ধঞ্চে, কলাই প্রভৃতি চাষ করলে কৃষি জমির উর্বরতা বাড়ত। তবে এখন দীর্ঘদিনের সেই প্রথাগত চাষ বন্ধ। জমির অনুর্বরতা ঠেকাতে জৈব চাষের প্রতি কৃষকদের উৎসাহিত করা উচিত। তবে তা সময়সাপেক্ষ হওয়ায় সবাই ঝুঁকছে রাসায়নিক সারের দিকে। এভাবে চলতে থাকলে একদিন দেশের কৃষিজমি পুরোপুরি অনুর্বর হয়ে পড়বে, যা মরুকরণে ঝুঁকির একটি প্রধান দিক।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে খরাকবলিত হয়ে ক্রমান্বয়ে ভূমির অবক্ষয় হচ্ছে। বিশেষত রাজশাহী অঞ্চল এ সমস্যাকবলিত অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত। অত্যন্ত জরুরি হলেও বিশ্ব খরা ও মরুকরণ প্রতিরোধ দিবস এ দেশে বিশেষ গুরুত্ব বিস্তার করতে পারেনি। তবে মরুকরণ রোধে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সরকারের পরিবেশবান্ধব বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম বিশেষভাবে গৃহীত হয়েছে, যা প্রশংসার দাবিদার। মরুকরণ বিস্তার রোধে অধিক বৃক্ষরোপণই হচ্ছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যেসব বৃক্ষ পানি ধরে রাখে এবং জমির মান অক্ষুণ্ন রাখতে পারে, সেসব বৃক্ষরোপণ করার ব্যাপারে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা সবাইকে পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশ্ব খরা ও মরুকরণ প্রতিরোধ দিবস পালনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কনভেনশনে গৃহীত মূল প্রস্তাবে বৃক্ষরোপণ এবং বিকল্প জ্বালানি সৃষ্টির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

অনেকেই আশঙ্কা করছেন, আগামী ৫০ বছরে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের অনেকটা অংশ সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, জীববৈচিত্র্য, স্বাস্থ্য, সুপেয় পানি ও উপকূলীয় এলাকার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টিপাত বেড়ে গিয়ে বন্যা হবে, খাদ্য উৎপাদন ৩০ ভাগ কমে গিয়ে ক্ষুধা ও গরিবের সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে, তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে হিমালয়ের হিমবাহগুলো গলে বিপর্যয়ের মুখোমুখি করবে আমাদের।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী, দেশে মোট নদীর সংখ্যা ৩১০টি। এর মধ্যে মৃত ও মৃতপ্রায় নদীর সংখ্যা ১১৭টি। এদিকে সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিইউএস) থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, সাধারণ হিসাবে গত ৪০ বছরে শুধু তিনটি প্রধান নদী- পদ্মা, মেঘনা, যমুনাতেই এ পর্যন্ত বিলীন হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমি। আর তার বিপরীতে নতুন ভূমি জেগেছে মাত্র ৩০ হাজার হেক্টর। প্রতিবছর কোনো না কোনো নদীর শাখা ধীরে ধীরে পলি পড়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো নদী দখল হয়ে যাচ্ছে দখলকারীদের হাতে। পরিকল্পনার অভাবেই নদীমাতৃক বাংলাদেশ থেকে এভাবে নদী হারিয়ে যাচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.