কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ ইউএনও কার্যালয় ভবনের নিচতলার প্রবেশপথে কান্নাকাটি করছিলেন বৃদ্ধ খন্দকার রুস্তম আলী। দুচোখের জল ছেড়ে দিয়ে বারবার বলছিলেন, ছয় সদস্যের পরিবার। বাড়িতে খাবার নেই। পরিবার অনাহারে আছে। কী করব? কোথায় যাবো?
বৃদ্ধ রুস্তমের এমন আর্তনাদ কানে পৌঁছায় ইউএনও বিতান কুমার মন্ডলের। দুপুরের খাবার খেতে বাসায় যাচ্ছিলেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী ইউএনও বিতান কুমার মন্ডল। গাড়ির জানালার গ্লাস অর্ধেক খোলা। মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন।
ফোনে কথা বলা শেষ করে সঙ্গে সঙ্গেই গাড়ি থেকে নেমে বৃদ্ধের কাছে এগিয়ে যান ইউএনও। বৃদ্ধের আর্তনাদ শুনলেন মনোযোগসহকারে। তারপর গাড়ির ভেতরে রাখা ১১ পদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন বৃদ্ধের হাতে। বাড়ি যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত ভাড়াও দেন ইউএনও। এ সময় খাবার পেয়ে ইউএনওর জন্য দুই হাত তুলে মোনাজাত করেন বৃদ্ধ।
মঙ্গলবার দুপুরে কুমারখালী উপজেলা চত্বরে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। এ সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তামান্না তাসনীম ও ইউএনও কার্যালয়ের স্টাফ ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বৃদ্ধ খন্দকার রুস্তম আলী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সাবেক আনসার সদস্য। তার পরিবারে স্ত্রী, কন্যা, নাতি-নাতনিসহ ছয় সদস্য আছেন।
বৃদ্ধ খন্দকার রুস্তম আলী বলেন, আগে আনসার বাহিনীতে চাকরি করতাম। স্ট্রোক করে চিটাগাং পাহাড় থেকে পড়ে যাই। পরে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। এদিকে চাকরিতে আর যেতে পারিনি। দুটো ছেলে ছিল। তারা ঢাকায় কাজে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। স্ত্রী, কন্যা, নাতি-নাতনি নিয়ে পরিবারে ছয়জন সদস্য। কাম-কাজ নাই। কী খাব। এ কথা শুনে ইউএনও স্যার খাবার দিছেন। আল্লাহ তার ভালো করুক।
ইউএনও বিতান কুমার মন্ডল বলেন, মানুষ হিসেবে একজন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি, সহযোগিতা করেছি। এটা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমি দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র।