• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫০ অপরাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করলে ইসরায়েলকে শক্তিশালী জবাবের হুঁশিয়ার ইরানের গাজায় এক গণকবরেই মিলল ৩০০ লাশ ইসরায়েলের গভীরে হামলার দাবি হিজবুল্লাহর বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক দুর্নীতির একটা সীমা থাকে, এটা সাগরচুরি বেনজীরের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট প্রভাবমুক্ত থেকে দুদককে অনুসন্ধান করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠক কাতারের সঙ্গে পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই রেয়াত সুবিধা বাতিল, ঢাকা থেকে ১৫ রুটে যত বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া চলমান তাপপ্রবাহ আরো কতদিন থাকবে, যা জানা গেল রংধনুর রফিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক বেনজীরের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান, অগ্রগতির প্রতিবেদন চেয়েছেন হাইকোর্ট পদে থেকেই ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন : হাইকোর্ট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের তফসিল ঘোষণা

শাড়ি-সেলোয়ারের দোকানে উপচে পড়া ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক : অনেকটা করোনামুক্ত ঈদ। তাই এবারের ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে কেনাকাটা। বিশেষ করে শাড়ি ও সেলোয়ার-কামিজের দোকানগুলোর সামনে নারী ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।
বিগত দুবছরে করোনার বিভীষিকাময় স্মৃতিকে মুছে ফেলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। লকডাউনে যখন প্রাণচাঞ্চল্যের রাজধানী শহর পরিণত হয়েছিল সুনশান ‘মৃত’ নগরীতে, তখনকার সময়কে মুছে ফেলে ঈদ উদযাপনে আগেকার মতো আবার ভিড় জমেছে রাজধানীর শপিংমলগুলোতে।
বসুন্ধরা সিটি শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, শাড়ি ও সেলোয়ার-কামিজের দোকানগুলোতে নারী ক্রেতাদের বেশ ভিড়। মূলত সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকে এ ভিড়। ইফতারের পর ভিড় আরও বাড়ে বলে জানান বিক্রেতারা।
ঈদের কেনাকাটা করতে আসা একজন ক্রেতা সুমাইয়া সানজিদা। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোজার শুরু থেকেই ভিড় ছিল। শেষ সময়ে এসে ভিড় অনেক বেশি বলে মনে হচ্ছে তার কাছে।
তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে দুই বছর তেমন কিছু কেনাকাটা করা হয়নি। এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শপিং করতে চলে এসেছি। আমি এবার ঈদে একটা শাড়ি ও তিনটা সেলোয়ার-কামিজ কিনেছি।
তবে ক্রেতারা বলছেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার দাম অনেক বেশি। বেইলি রোডে শাড়ি কিনতে এসেছিলেন শাবনূর কলি। তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত দাম মনে হচ্ছে। ভালো থ্রি-পিস কিনতে গেলে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। শাড়ির দাম আরও বেশি। একেকটি ভালো শাড়ির দাম ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
একই অভিযোগ করেন তাসনুভা সাদিদ। তিনি বলেন, ঈদে এবার মাত্রাতিরিক্ত দাম। কেবল শাড়ি-সেলোয়ার কামিজ নয়, কসমেটিকসের দামও অনেক বেশি। ঈদের আগে যে ফেসওয়াশের দাম ছিল ২০০ টাকা, সেটি এ কয়দিনের ব্যবধানে ৩৫০ টাকা হয়ে গেছে।’
এ ব্যাপারে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, করোনার সময়ে টানা দুই বছর লোকসানের মুখে ছিলেন তারা। দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন-বোনাস এসবের কথা মাথা রেখেই দাম বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তারা।
বসুন্ধরা আলভি ফ্যাশনের ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বলেন, দুই বছর কোনো ব্যবসা হয়নি। এ মৌসুমে লভ্যাংশ থেকে কিছুটা খরচ উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা।
কসমেটিকসের দাম এত কেন জানতে চাইলে গুলশান ডিএনসিসি মার্কেটের বিক্রেতা মাহমুদুল হাসান বলেন, যুদ্ধের বাজারে দাম বেড়ে গেছে। সময় মতো পণ্য আসছে না। পণ্য পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। এছাড়াও আছে বড় রকমের সরবরাহ সংকট। এতে করে বাধ্য হয়ে দাম বাড়িয়ে দিতে হয়েছে।
এদিকে ডিএনসিসিতে শপিং করতে আসা ক্রেতা হুমায়রা হোসেনের সঙ্গে কথা বললে, তিনি জানান, ডিএনসিসিতে দাম তুলনামূলক কম। তবে বিভিন্ন শপিংমলগুলোতে কসমেটিকসের দাম আকাশচুম্বী।
একটি ফেসওয়াশ দেখিয়ে তিনি বলেন, একই ফেসওয়াশ যমুনা ফিউচার পার্কে ৬৫০ টাকা, অথচ ডিএনসিসিতে কিনতে পারছি ৪০০ টাকায়।
বসুন্ধরায় আড়ং, দেশাল, দেশি-দশের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, দেশীয় ডিজাইনের শাড়ির দিকে নারীদের আগ্রহ বেশি। আড়ংয়ের বিক্রয়কর্মী আমানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জামদানি শাড়ির প্রতি নারীদের আগ্রহ অনেক। একেকটি ভালো মানের জামদানি ১০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
শাড়ি কিনতে এসে মুমতাহিনা মাহমুদ বলেন, সুতির শাড়ির দাম তুলনামূলক কম। আর গরমে পরে আরাম পাওয়া যায়। এবারের ঈদে আমি হালকা ধাচের দুটি সুতির শাড়ি কিনেছি।
কেবল শাড়ি-সেলোয়ার-কামিজ নয়, মেকাপ পণ্যেও মেয়েদের আগ্রহ ছিল লক্ষ্যণীয়। তবে দোকান থেকে মেকাপ পণ্য কেনার থেকে অনলাইন থেকে কেনাকে বেশি সাশ্রয়ী বললেন ক্রেতারা।
জাপানি প্রতিষ্ঠান মিনিসোতে কথা হয় ক্রেতা ইলমা ইকবালের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি মূলত অনলাইনেই মেকাপ কিনি। অনলাইনে সাশ্রয়ী ও অনেক ধরনের অফার পাওয়া যায়। এবার ঈদে প্রাইমার, ফাউন্ডেশন, মাশকারা, আইলাইনার, লিপস্টিক ও নেইলপলিশ কিনেছি। মার্কেটে এসেছি মূলত পছন্দসই একটি পারফিউম কিনতে।
ঈদ মানে চাঁদরাতে মেয়েদের হাতে মেহেদি লাগানোর ধুম। নানা নকশা আর ডিজাইনের আঁকিবুঁকিতে রাঙা হয়ে ওঠে তাদের হাত। অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি মেহেদির দোকানগুলোতেও দেখা গেছে নারী ক্রেতাদের আগ্রহ।
আনারকলি শপিং সেন্টারের কসমেটিকস বিক্রেতা আসাদুজ্জামান জানান, ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই চলে মেহেদি কেনার ধুম। কেবল মেহেদী নয়, হাতে লাগানোর জন্য গ্লিটারও কেনে মেয়েরা।
মৌচাকের একটি মেহেদির দোকানে দেখা হয় সায়মা সুলতানার সঙ্গে। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। তিনি বলেন, আমার দুটা বাচ্চা মেয়ে আছে। মূলত ওদের জন্যই মেহেদি কিনতে আসা।
কেবল নিজের জন্য নয়, প্রিয়জনকে উপহার দিতেও অনেকে ভিড় জমাচ্ছেন শপিংমলে। বেইলি রোড শাড়ির দোকানের সামনে কথা হয় সিয়াম আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি মূলত আমার মা, বোন ও স্ত্রীর জন্য শাড়ি কিনতে এসেছি। এ বছর নতুন চাকরি পেয়েছি। তাই তাদের সারপ্রাইজ দিতে এসব কেনাকাটা। অন্যসময় ওরাই কেনাকাটা করে।
ঈদ মূলত বাঙালি মুসলমানের এক প্রাণের উৎসব। রাজধানীর শপিংমল গুলোর প্রাণচাঞ্চল্যই বলে দেয় ঈদ চলে এসেছে। নিজের জন্য, প্রিয়জনের জন্য ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য উপহারের ছড়াছড়িতে ঈদ হয়ে ওঠে বৈষম্যহীন ও রঙিন। শপিংয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের দর কষাকষি, অনুযোগ-অভিযোগ, পছন্দের পোশাক খুঁজে পাওয়া, না পাওয়া- সবকিছু ছাপিয়ে মেহেদির রঙের মতোই রঙিন হয়ে ওঠে বাঙালির সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.