নিজস্ব ডেস্কঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের বারান্দায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে বারান্দায় থাকা শিক্ষার্থীদের খাট, বিছানা জাতীয় ভারী আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ।
গত ২১ সেপ্টেম্বর হল অফিস থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মজিবুর রহমান সাংবাদিককে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের দক্ষিণ ব্লকের দক্ষিণ ও পশ্চিমের বারান্দায় ফাটল দেখা দিয়েছে। উক্ত বারান্দায় কোনোপ্রকার খাট বা বিছানা জাতীয় ভারী আসবাবপত্র রাখা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বারান্দায় কোন ছাত্র অবস্থান করতে পারবেনা। তাই আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে বারান্দায় রাখা নিজ নিজ বিছানাপত্র ও খাট সমূহ সরিয়ে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ছাত্রদের নির্দেশনা দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এই সময়ের মধ্যে সরিয়ে নেয়া না হলে হল কর্তৃপক্ষ এই সব খাট বা বিছানাপত্র সরিয়ে ফেলবে। একইসঙ্গে বারান্দায় অবস্থানরত ছাত্রদের অনতিবিলম্বে হল অফিসে যোগাযোগ করে সিটের জন্য আবেদন করতে বলা হচ্ছে।
এছাড়াও আগামী ৫ অক্টোবর আবাসিক হল খোলার জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে হলটি। স্বাস্থ্যসুরক্ষার জন্য হলের প্রবেশ পথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইসঙ্গে হলের অভ্যন্তরে পরিস্কার পরিচ্ছন্নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হলের গণরুম তুলে দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কক্ষে ফাকা সিটের বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ বরাদ্দ সম্পন্ন হয়েছে।
সলিমুল্লাহ মুসলিম হল অফিস সূত্রে জানা গেছে, ‘ইতোমধ্যে ফাটলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছে হল প্রশাসন। এর প্রেক্ষিতে বুয়েটের তিন সদস্যের একটা বিশেষজ্ঞ দল হলের ফাটল পরিদর্শন করেছে। পরিদর্শন শেষে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে ফাটলের স্থানগুলোতে ভারী জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। এছাড়াও বেশকিছু কক্ষ খালি করার জন্য বলা হয়েছে। পরবর্তীতে স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করেছে বিশেষজ্ঞ দলটি। এরই অংশ হিসেবে হল অফিস থেকে আসবাবপত্র সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে হলের ছাদে স্থাপিত ভারী পানির ট্যাংকগুলোও অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন হলগুলোর মধ্যে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল অন্যতম। এর আগেও হলের বেশকিছু জায়গায় ফাটল দেখা দেয়। তবে সেসময় সেই অনুযায়ী তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে এবার বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মজিবুর রহমান।
এই বিষয়ে তিনি সাংবাদিককে বলেন, ‘কিছু কিছু বেশি ঝুকিপূর্ণ হয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। সেখানে অবস্থানরত ভারী আসবাব সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভারী পানির ট্যাংকি সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে বারান্দায় অবস্থানরত ছাত্রদের ফাকা সিটগুলোতে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা ৭৫ শতাংশ ছাত্রদের বরাদ্দ সম্পন্ন করেছি।’