গণতন্ত্র, অবাধ তথ্য প্রবাহ, সুশ্বাসন ও মুক্ত বানিজ্যের সুবিধা নিয়ে বিশ্বের বহু আধাগণতান্ত্রীক দেশ এখন বিশ্বকে টেক্কা ও টিপ্পুনি দিয়ে চলেছে। এই তালিকায় উদার সমাজতন্ত্র, প্রতাপশালী এক নায়কতন্ত্র, রাজতন্ত্র ও বিভিন্ন স্বৈরাচার শ্বাসকগোষ্টির নামও আছে। তারা বিভিন্ন শক্তিশালী দেশের লেজুড়বৃত্তি করে জনগণের উপর শক্তি প্রয়োগ করে দেশ শ্বাসন করে চলেছে। ফলে, বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে আধুনিক গণতন্ত্রীক সমাজব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলা হয়েছে।
সমাজতন্ত্রকে ঠেকাতে গিয়ে আমরা একদিকে চীনা ধাচের গণতান্ত্রীক ধারাকে প্রশ্রয় দিয়ে বিড়ালকে যেমন বাঘে পরিণতি করেছি তেমনি, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের তরল সোনা লুট করার জন্য বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্টি সৃষ্টি, ধর্মীয় মোড়কে জ্বীহুজুর মার্কা রাজতন্ত্র, তাদের বসে রাখতে ইসরাইলের মত বিপন্নজাতীকে বিলুপ্ত ইহুদী জাতী সংরক্ষনের নামে একটি দখলদারী রাষ্ট্র সৃষ্টি করে যে বলদর্পী বিশ্ববলয় তৈরী করা হয়েছে, যার ফলে একদিকে সৃষ্টি হযেছে প্রতিবাদী মানুষের অধিকারের লড়াই। আর অন্যদিকে দেশে দেশে করা হয়েছে মারানাস্ত্র তৈরীর প্রতিযোগীতা। আর এসব করতে গিয়ে এই ছোট্র পৃথিবীকে এক হাজার বার ধ্বংস করার মত মারানাস্ত্র বানিয়ে মহাজগতকে মানুষশূণ্য করার পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। কিন্ত প্রকৃতি তার আপনগতিতে এই বিশ্বকে রক্ষা করতে সক্ষম তা হয়তো মানুষের চিন্তারও বাইরে।
বর্তমান বিশ্ব এক ভয়াবহ বিস্ফোরকের উপর দাড়িয়ে আছে। ক্ষমতার দ্বন্দে অসম প্রতিযোগীতা মানুষকে অমানুষ হতে প্রলুদ্ধ করেছে। একটা দেশের শ্বাসক অন্য একটি দেশে একটা বড় বোমা ফেললে শুধু সেই খানে যে কিছু শত্রুই মরে, তা-নয়; তার সাথে মরে নিরিহ পুরুষ-নারী-শিশু। কিন্তু বোমা ফেলার নির্দেশদাতা সরকার প্রধানের ভিতরে এই হত্যার জন্য তাকে কোন অনুসূচনা বা কোন প্রতিক্রিয়া দেখাতে হয় না। তৎক্ষনাত তার উপর নিরিহ নির্যাতিত মানুষের অভিশাপের অদৃশ্য প্রভূর শাপও বাস্তবায়ন হয়না্। ফলে, মানুষরুপী জালিম শ্বাসকগণ নিরিহ মানুষ হত্যার জন্য কোন অনুসূচনা বোধ করে না এবং ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা “কুচ ভি” করে চলে।
এভাবেই এই পৃথিবী মনুষ্যত্বের বিবেক বিকিকিনির বানিজ্যিক রুপ লাভ করেছে। আধুনিক সমাজব্যবস্থা গঠনে গণতান্ত্রীকধারা চর্চার বিপরিতে বিভিন্ন আদর্শীক বড় বড় শক্তিশালী দেশ ও জোটের কবলে পড়ে আজ ছোট ছোট দেশগুলিকে আঞ্চলিকতায় বন্ঠিত হচ্ছে সমাজতন্ত্র গণতন্ত্র ও রাজতন্ত্রের আদলে। বিভক্তকরা হচ্ছে উন্নয়নের বিভিন্ন ভীষন স্বৈরতন্ত্রীকভাবে। তাই বিপন্ন গণতন্ত্র ও আইনের শ্বাসনের উল্টোচিত্র আজ সারা বিশ্বজুড়ে।
বিশ্ব এখন করোনা নামক এক অদৃশ্য ভাইরাসে নাজুক। অনেকে বলছে পারমানবিক বোমার পাশাপাশী জীবানু অস্ত্রের গবেষনার ফসল এই করোনা বা ‘কোভিন-১৯’। বিশ্বের বড় বড় ভাইরাসের জন্মস্থান চীন। সমাজতন্ত্রকে রুখতে গিয়ে এই চীনকে প্রশ্রয় নিয়ে নাদুষ-নুদুষ করেছে মহাশক্তিশালী দেশ আমেরিকা তথা ন্যাটোভূক্ত দেশগুলি। চীন নিজেকে গণতান্ত্রীক দেশ হিসেবে জাহির করলেও এটা একনায়কতন্ত্র সমাজ ব্যবস্থা। যার ভিতরে ভেদ করা যায় না। তারা নিজের দেশের মুসলিম নাগরিক “উইঘুরি” সম্প্রদায়ের দশ লাখ নাগরিককে বন্দী করে বছরের পর বছর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে অথচ মুক্তবিশ্ব সে ব্যাপারে বলতে গেলে কিছুই জানে না!
একদিকে মুক্তবিশ্বের গণতন্ত্র, অবাধ তথ্য প্রবাহ ও মুক্ত বানিজ্যের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে চীন একচেটিয়া ব্যবসা করে যাচ্ছে। অন্যদিকে সেই একই সুবিধা চীন তাদের দেশের ক্ষেত্র মুক্তবিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়নি। ফলে, মুক্তবিশ্বের স্বাদ নিয়ে চীন সবার পেটের ভিতরের খবর নিয়ে নিজেকে বিশ্বের সেরা অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। আর এই শক্তির বলে বলিয়ান হয়ে চীন এবার সারা বিশ্বকে নিজেদের করায়ত্ত্বে নেয়ার চেষ্টা করে চলেছে। ইতিমধ্যে বিশ্বের অধিকাংশ স্বৈরতান্ত্রীক দেশগুলিকে অর্থনৈতিক সাহায্যের প্রলোভন দেখিয়ে ঋণের জালে জড়িয়ে ফেলেছে।
করোনার শক্তি কি তা এরই মধ্যে বিশ্ব টের পেয়ে গেছে। জানিনা, এর চেয়ে শত সহস্রগুন বেশী শক্তিশালী ভাইরাস চীন বা উত্তর কোরিয়ার মত দেশের ল্যাবে বিশ্বমানবতা ধ্বংসের জন্য উম্মুখ হয়ে আছে কিনা। জয় হোক করোনামুক্ত বিশ্বমানবতার।