করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে মানুষের নানা দুর্ভোগ তথা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পাওয়ার সংকট। বিশেষ করে করোনাভাইরাসে গুরুতর রোগীদের সেবা দেয়ার আইসিইউয়ের (নিবির পর্যবেক্ষণ ইউনিট) সক্ষমতা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে যে, বর্তমানে বাংলাদেশে পরিপূর্ণ আইসিইউ ইউনিট রয়েছে মাত্র ১১২টি। তবে, বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সাড়ে পাঁচশটিরও বেশি ভেন্টিলেটর আছে। আর প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে আরও ৩৮০টি।
পরিপূর্ণ আইসিইউ ইউনিটের অর্থ: যেখানে বিশেষ ধরণের শয্যা, কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য ভেন্টিলেটর, টিউব, পাম্প, হার্টরেইট, ব্লাড প্রেসারসহ অন্যান্য শারীরিক পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক চিত্র পাবার মনিটরসহ নানা আধুনিক মেডিকেল সরঞ্জাম থাকে। আইসিইউ পরিচালনা করার জন্য থাকে বিশেষজ্ঞ ও দক্ষ জনবল। যাদের প্রত্যেকের থাকে প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত বিশেষ সুরক্ষা পোশাক। যা এই মুহুর্তে বাংলাদেশের করোনা হাসপাতালগুলোতে খুবই অপ্রতুল।
গত জানুয়ারিতে এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার অনুপাতে আইসিইউ বেডের সংখ্যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের চাইতে সবচেয়ে কম। নেপালে প্রতি এক লাখ মানুষের জন আইসিইউ আছে ২.৮টি, ভারত ও শ্রীলঙ্কায় ২.৩টি, পাকিস্তানে ১.৫টি, মিয়ানমারে ১.১টি সেখানে বাংলাদেশে আছে দশমিক ৭টি। মানে প্রতি এক লাখ মানুষের জন্য একটি আইসিইউ-ও নেই।
চীনে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশের প্রস্তুতি নিতে দুই মাসের বেশি সময় থাকলেও সেটা যথাযথভাবে কাজে লাগানো হয়নি। অবশ্য, আমেরিকাসহ ইউরোপের উন্নত স্বাস্থ্যসেবার দেশগুলোতেও আইসিইউ সেবার অভাব দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি কেমন হবে সেটা নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বিগ্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। বর্তমান পরিস্থিতিতে আইসিসিইউ ইউনিট যদি শুধুমাত্র ভিআইপি রোগীদের জন্যে রিজার্ভ রাখা হয় তথাপী সংকট উত্তরন সম্ভব নয় বলে নানা মহলে আলোচীত।
অতএব, জাতীয় সংসদে স্বাস্থ্যখাতে যে বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তা দিয়ে এই মূহুর্তে সংকট উত্তরনের জন্য জরুরীভিত্তিতে আইসিসিইউ ইউনিট স্থাপন করা যেতে পারে।